নোবিপ্রবি প্রতিনিধি: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ভিসি-প্রোভিসি সহ ৫ জনকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগে আইনের তোয়াক্কা না করেই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুবোধ কুমারকে তার চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়েছে- এমন অভিযোগ এনে আইনি নোটিশ দিয়েছেন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
চেয়ারম্যান পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়াটি আইন লঙ্ঘন বলে দাবি করে গত ১৮ নভেম্বর নোটিশ দেন এই আইনজীবী। নোটিশ জারির ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা লিখিতভাবে জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। তা না হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়।
নোটিশ প্রাপ্তরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) জসিম উদ্দিন, বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ ও বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান তনিমা সরকার।
নোটিশে বলা হয়েছে, 'আমার ক্লায়েন্ট নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। গত ২৪/০৪/২০১৮ তারিখে বিভাগের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন তিনি। সততার সাথে তিনি তার দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ৩/০৫/২০২১ তারিখে ২য় মেয়াদে বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন যা ৩/০৪/২০২১ তারিখ থেকে পরবর্তী ৩ বছরের জন্য কার্যকর ছিল।
চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি দক্ষতার সাথে তার প্রশাসনিক ও শিক্ষাগত দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু সম্পূর্ণ আশ্চর্যের সাথে, ০১/১১/২০২১ তারিখে নোটিশ রিসিভার নং ৩ আমাদের ক্লায়েন্টকে ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান হিসাবে তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে একটি চিঠি জারি করেছে। চিঠিতে অন্য কোনো বিষয় প্রকাশ করা হয়নি যা আমাদের ক্লায়েন্টকে কোনো পরিবর্তন বা অন্যথায় সতর্ক করবে।
গত ০১/১১/২০২১ তারিখে নোটিশ রিসিভার নং ৩ একটি অফিস আদেশের মাধ্যমে বায়োকেমিস্ট্রি এবং মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নিযুক্ত করা হয়েছে৷ পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নিয়োগ বৈধ থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
গত ৩/০৫/২০২১ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা দ্বিতীয়বারের জন্য চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছেন যা ২৪/০৪/২০২১ থেকে ৩ (তিন) বছরের জন্য নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আইন ২০০১ এর ধারা ২৫ (২) অনুযায়ী কার্যকর হবে। বিভাগের চেয়ারম্যান হিসাবে আমাদের ক্লায়েন্টের উপরোক্ত নিয়োগ এখনও ২৩/০৪/২০২৪ পর্যন্ত বৈধ এবং কোন কারণ দর্শানো ছাড়া তার নিয়োগ বাতিল করা যাবে না এবং তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ দিতে হবে।
নোটিশে আরও বলা হয় যে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১-এর ধারা ২৫ (৩) স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে সহযোগী অধ্যাপকের অধীনে কোন বিভাগের চেয়ারম্যান তিনিই হবেন। স্বীকার্য যে, নোটিশ প্রাপক নং ৫ একজন সহকারী অধ্যাপক যিনি আইনের ধারা ২৫ (৩) এর বিধান অনুযায়ী বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য নন। অতএব, বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ প্রত্যাহার/বাতিল হতে বাধ্য।
এবিষয়ে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, "আমি আইনি নোটিশ পেয়েছি। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষকের তদন্ত চলছে এমতাবস্থায় তদন্ত কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী এসকল শিক্ষককে তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত কোন দায়িত্বে থাকা যাবেনা। তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন এটা তার ব্যক্তিগত অধিকার। যেসকল কারণে তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়েছে সে সবকিছু আমরা নোটিশ অনুযায়ী বিস্তারিত জানিয়ে দিবো’’।
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, "এখনো আইনি নোটিশ আমার কাছে আসেনি। তিনি আইনের আশ্রয় নিয়েছেন এটা তার ব্যাক্তিগত বিষয়। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে বিবেচনা অনুযায়ী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে ব্যখ্যা দিবে''।
এমআই