কুমিল্লা প্রতিনিধি : কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরকে সহযোগীসহ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া পাঁচজনকে সিসি ফুটেজ দেখে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে চারজনের নাম–পরিচয় পাওয়া গেছে। এই চারজনই হত্যা মামলাটির এজাহারভুক্ত আসামি। বাকি দুজনের মধ্যে একজনের নাম ও একজনের জেলার তথ্য পাওয়া গেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহান সরকার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, স্থানীয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের দেওয়া তথ্য থেকে হত্যায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের নাম-পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
পুলিশের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হত্যাযজ্ঞে অংশ নেন শাহআলম (২৮), সাজন (৩২), মো. সাব্বির হোসেন (২৮), সোহেল ওরফে জেল সোহেল (২৮), নাজিম ও ফেনী থেকে আগত অজ্ঞাতপরিচয়ের এক আসামি। এই ছয়জনই পলাতক।
হত্যায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে শাহ আলম কুমিল্লা নগরের সুজানগর পূর্বপাড়া বউবাজার এলাকার প্রয়াত জানু মিয়ার ছেলে, সাজন সংরাইশ রহিম ডাক্তারের গলির বাসিন্দা কাঞ্চন মিয়ার ছেলে, মো. সাব্বির হোসেন সুজানগর পানির ট্যাংক–সংলগ্ন এলাকার রফিক মিয়ার ছেলে, সোহেল ওরফে জেল সোহেল নবগ্রাম এলাকার শাহআলমের ছেলে। এ ছাড়া নাজিম নামের এক ব্যক্তি ও ফেনীর অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি রয়েছেন। এই দুজন ছাড়া অপর চারজন এজাহারনামীয় আসামি।
পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে, ঘটনার আগের দিন রোববার রাতে (২১ নভেম্বর) সাজনের বাসায় বৈঠক হয়। এরপর ২২ নভেম্বর সোমবার ঘটনার দিন বিকেল চারটায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করে কাউন্সিলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থ্রি-স্টার এন্টারপ্রাইজের অফিসের দিকে রওনা হন ঘাতকরা।
গ্রেপ্তার হওয়া সন্দেহভাজন আসামি মোহাম্মদ রাব্বী ইসলাম ওরফে অন্তু অটোরিকশা ভাড়া করে দেন হত্যাকারীদের। আজ সোমবার কুমিল্লার আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানান মোহাম্মদ রাব্বী ইসলাম। রবিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও এবং একটি ছবি পাঠানো হয়। ২৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, দৌড়ে ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে দুই ব্যক্তি কাউন্সিলর সোহেলের থ্রি–স্টার এন্টারপ্রাইজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে দিকে প্রবেশ করছেন। ব্যস্ততম সড়কটি গুলিবর্ষণের কারণে ফাঁকা। এরপর ফুটেজে দেখা গেছে দুজন বেরিয়ে যান। পেছনের ব্যক্তি গুলি করে সড়ক ধরে পূর্বদিকে চলে যাচ্ছেন।
ছবিতে দেখা গেছে কালো পোশাক, মাথায় কালো কাপড় বাঁধা ও কালো মুখোশ পরা দুই ব্যক্তির হাতে পিস্তল। এতে পিস্তল হাতে প্রথমে শাহ আলম ও তার পেছনে নাজিমকে দেখা যাচ্ছে। এর পেছনে পাথুরিয়াপাড়া রথ সড়কের বিদ্যুতের খাম্বার কাছে কালো পোশাকধারী আরও তিনজনকে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে।
গত ২২ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটায় কুমিল্লা নগরের পাথুরিয়াপাড়া থ্রি–স্টার এন্টারপ্রাইজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মো. সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় আরও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় ২৩ নভেম্বর রাতে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮–১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। পুলিশ এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। র্যাব গ্রেপ্তার করেছে তিনজনকে।
সময় জার্নাল/এসএ