শীতের বিকেলবেলা
শীতের বিকেলগুলো ঝুপ করে নেমে যায়,
টুপ করে ডুব দেয় সূর্যটা।
হঠাৎ আলোটা কমে গাঢ় হয় পাতা রাশি,
যা ছিলো সারাটাদিন রঙচটা।
শীতের বিকেলবেলা বড়ো বেশি তাড়াহুড়ো,
পিলসুজে বাতি জ্বালো জলদি।
সারাদিন ঝকঝকে, তকতকে নীলাকাশ,
ক্রমে ক্রমে হয়ে আসে হলদি।
মধ্যদুপুরে দুটো পেট পুরে ভাত খাও,
আলগোছে চোখ যদি মুদলে,
বুকের ভেতর যেন ধড়াস চমকে ওঠে!
ওমনি আসর ডাক শুনলে।
এ বড়ো আজব বেলা ধরে বেঁধে আটকাবে,
এমনটা আছে কার সাধ্য?
দু’চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় সে বারবার,
সময় নেইকো, হও বাধ্য।
শীতের বিকেল নিয়ে কতো গান, কতো ছবি,
কতো যে কাব্যরস বইছে।
শীতের বিকেল যেন নরম চাদরে মোড়া,
গরম চায়ের কথা কইছে।
সময়টা বড়ো বেশি আহ্লাদে গলে পড়ে,
ঠিক যেন ভোরবেলা শিশির কণা।
চট করে ছুঁয়ে দিলে, ফট করে পড়ে যাবে,
মৌসুমি নামাজির ঈমান মনা।
এইবেলা মাঝে মাঝে দাঁড়িও বারান্দায়
কিংবা চোখ রেখো জানালার পাশে,
দেখবে কেমন করে পাতাগুলো ঝরে পড়ে,
সবুজ হলদে হয় কি করুণ ক্লেশে!
সারাদিন কতো আলো, কতো সুর গুনগুন,
বয়ে গেছে অন্তরে ভাবো তো?
বিকেলে সে সব রঙ ম্লান হয়ে আসবেই,
মনখানা হয়ে যাবে ক্লান্ত।
বিকেলবেলাটা যেন জীবনের প্রতিচ্ছবি,
বলে যায় আয়ু বড়ো অল্প,
বলে যায় সমারোহে মহা নিঃশব্দে,
এটা যেন জীবনেরই গল্প।
আমার তো এইবেলা মনটা কেমন করে,
মন খালি ছুটি চাই, ছুটি চাই।
পৃথিবীর আলো, ছায়া সব যেন মোহ, মায়া,
মন সে আপন লোকে ছুটে যায়।
যেখানে রয়েছে চিরবসন্ত উৎসব,
যেখানে জীবন এতো ছোট নয়।
যেখানে প্রভুর মায়া চিরকাল জাগ্রত,
মন শুধু সেখানেই যেতে চায়।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
১৮ ডিসেম্বর ২০২১।