নিজস্ব প্রতিবেদক। বিশেষ অভিযান চালিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান গ্রুপের সাত অস্ত্রধারী চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের একটি দলের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—মো. নাসির, কাওছার আহমেদ ইমন, মোহাম্মদ জীবন হোসেন, মো. ওমর খৈয়াম নিরু, ফারহান মাসুদ সোহান, মো. আসলাম এবং মো. মহিন উদ্দিন জালাল।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ সোমবার বেলা ১২টায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, পূর্ব বাড্ডার আলিফ নগর এলাকার জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম খান ওরফে টুটুলকে গত ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ৫১ মিনিটে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা সঠিক সময়ে না দিলে ওই ব্যক্তির সন্তানসহ পরিবারের ওপরে হামলা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
এর পর ২১ নভেম্বর বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে জেনারেটর ব্যবসায়ী টুটুলের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অজ্ঞাতনামা দু-তিন জন ব্যক্তি ঢুকে চাঁদা দাবি করে এবং পিস্তল বের করে গুলি করে চলে যায়। পরে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় মামলা রুজু হয়। মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে সন্ত্রাসী মো. নাসিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রোববার (২৬ ডিসেম্বর) ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর বাড্ডা এবং বান্দরবান জেলা থেকে কাওছার, জীবন, নিরু, সোহান, আসলাম ও মহিনউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা গুলশান জোনাল টিম। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৩ রাউন্ড গুলি এবং ছয় হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ কে এম হাফিজ আক্তার আরও বলেন, দুবাইয়ে অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান, তাঁর ভাই শামিম এবং কাশিমপুর কারাগারে থাকা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী মামুনের অনুগত ইমন, জীবন ও নিরুর টাকার প্রয়োজন হলে তারা এলাকার বড় ভাই মো. মহিনউদ্দিন জালালের কাছে যায়। তাদের একটি ‘কাজ’ বা ‘টার্গেট’ দেওয়ার জন্য বলে। পরবর্তীকালে মো. মহিনউদ্দিন জেনারেটর ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামের খোঁজ দেয়। নিরু, জীবন ও ইমন কাজটি করার জন্য বাসের চালকের সহকারীর কাজ করা নাসিরকে ঠিক করে। কীভাবে গুলি করতে হবে, তা নাসিরকে শিখিয়ে দেয় জীবন।
গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিরা দুবাইপ্রবাসী চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের ক্যাডার বলে স্বীকার করেছে বলে পুলিশের দাবি। তথ্যপ্রযুক্তির উপাত্ত বিশ্লেষণে দুবাইপ্রবাসী চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় বলে জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমানের নির্দেশনায় গুলশান জোনাল টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মাহবুবুল হক সজীবের নেতৃত্বে এ অভিযানটি পরিচালিত হয়।
সময় জার্নাল/আরইউ