নিজস্ব প্রতিবেদক। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতীম পেশাজীবী চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) ২৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকাল ৩ টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিলন হলে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভাশেষে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) শাখা স্বাচিপের সদস্য সচিব সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ার্দারের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন স্বাচিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা . এম ইকবাল আর্সলান।
আলোচনা সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এমএ আজিজ বলেন, হাঁটি হাঁটি পা-পা করে বাংলাদেশের বৃহত্তম পেশী সংগঠন স্বাচিপ বাংলাদেশের উন্নয়নের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে স্বাচিপের চিকিৎসকরা জনতার স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করেছে। বিগত দিনের করোনার সময় স্বাচিপের চিকিৎসকরা ফ্রন্টলাইনার হিসেবে জনগনের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার ভিশনারি লিডারশিপে জীবন জীবিকা চালু রেখে কৌশল অবলম্বন রেখে বাংলাদেশের কোভিড অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবায় বিভিন্ন উন্নয়ন জননেত্রী শেখ হাসিনা বিগত দুই বছরে বিশ হাজার কোটি টাকা বাজেটে বরাদ্দসহ হাজার হাজার চিকিৎসক নার্স নিয়োগ দিয়েছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা করোনার মধ্যে বিশ্বে প্রথম নেত্রী হিসেবে দরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেবার দাবি তুললে সারা বিশ্বের মানুষকে সহজেই করোনার টিকা দেবার নজীর আমরা দেখেছি।
অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, নির্বাচন অতি আসন্ন। আমাদের চিকিৎসক সমাজের উচিৎ জননেত্রী শেখ হাসিনার অর্জন ও উন্নয়ন কর্মকান্ড মানুষকে জানাতে হবে। যা দেখে জনগণ আমাদের ভোট দেবে । আগামী নির্বাচনে জয়ী হতে হবে। সেই নির্বাচনে জয়ের বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যায়লের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশে ৭০০ চিকিৎসক থেকে ১,১০,০০০ এক লক্ষ দশ হাজার চিকিৎসকে উন্নীত করেছেন। স্বাধীনতার আগে চারটি হেলথ কমপ্লেক্স থেকে তের হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের পরিণত করেছেন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ দিতে চাই কারণ তিনি তার পরিবার সদস্যরা এদেশে চিকিৎসা নেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের চিকিৎসা এই মেডিকেলবিশ্ববিদ্যালয়ে আস্থার সাথে করাচ্ছেন। বাংলাদেশের কোন মানুষকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য যেতে হবে না। আমি অনুরোধ করি, যারা দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে চান তারা এখানে এসে চিকিৎসা করান। আমরা সবার চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত আছি।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বাইরের কোন শক্তি যাতে দেশে ক্ষমতায় আসায় পায়তারা করতে না পারে আমরা তা মোকাবেলায় রাস্তায় থাকবো।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় আওয়া লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বিবিসির জরিপে বাংলাদেশের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু আমি বলব, বাংলাদেশের কোটি কোটি বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন মানুষের জন্য কাজ করেছেন। এদেশের মানুষের মুক্তির জন্য জেলজুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন। বঙ্গবন্ধু আজীবন মানুষকে ভালবেসেছেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি এদেশের মানুষকে ভালবাসে না। বিএনপি জামায়েত, স্বাধীনতার সকল শক্তি সিমিতির। বিএনপি যাদের নিয়ে করা হয়েছে তাদের ৯৯.৯% স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি দিয়ে। তাদের মধ্য দু একজন স্বাধীনতার পক্ষের লোক ভুল করে গেছে। তারা বুঝতে পারেনি বলে বিএনপিতে গেছে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি দেশের মাটি ও মানুষকে ভালবাসতে পারেনি। এখন তাদের চিন্তায় পাকিন্তান, তারা এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন , খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামী । তাকে বিদেশ পাঠালে অন্যদেরও পাঠাতে হবে।কোন দেশে নমুনাআছে যে, বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। আমার দেশে এখন অত্যন্ত উন্নমানের চিকিৎসা সেবা রয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসায় পর দেশে চিকিৎসা ও শিক্ষার উন্নয়ন করেছেন। দেশে ১২২ টি মেডিকেল কলেজ এবং নার্সিং ইনস্টিটিট আছে। সাজা প্রাপ্ত কোন আসামীকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা দেবার কোন আইন আছে কি? উনারা আন্দোলন করতে আসছে। স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদসহ সকল মুক্তিযুদ্ধের সংগঠনকে এই আন্দোলন প্রতিহত করার আহ্বান জানান তিনি।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আজকে শুনা যাচ্ছে খালেদা জিয়া এক নম্বর মুক্তিযুদ্ধা। এটি কত বড় বিভ্রান্তিকর। মুক্তিযুদ্ধের সময় উনি (খালেদা জিয়া) ক্যান্টমেন্টে জানজুয়ার ওখানে ছিলেন। এদের জন্ম হয়েছে অসত্য মিথ্যা বিভ্রান্ত করে মানুষকে ধোকা দেয়ার জন্য। এদেশের মানুষ স্বাধীনতার স্বপক্ষের। আর যারা বিএনপি যারা আছেন, তাদের যদি এখানে ভাল না লাগে তবে আপনাদের প্রিয় পাকিস্তানে চলে যান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, বিএমএর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমএর মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোঃ ইহতেশামুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
সময় জার্নাল/আরইউ