মানিক মুনতাসির : আহা! স্বাধীনতা, আহা! সুবর্ণ জয়ন্তী। কত বড় রাষ্ট্রীয় আয়োজন। সাথে সাধারণ ছুটি। কিন্তু এই আয়োজনে জনগনের অংশগ্রহন কতটুকু। সরকার দলীয় বাদে একজন মানুষও কি এই আয়োজনে অংশ নিতে পেরেছেন? নাকি সরকার সাধারন মানুষকে এতে সম্পৃক্ত করতে পেরেছে?
এরপরও ঢাকাসহ সারাদেশে চলছে উৎসব, গান- বাজনা। আবার হত্যা, মারামারি, কাটাকাটি, সংঘর্ষ, মোদি বিরোধী প্রতিবাদ, খুন, মেলা, আয়োজন, বনভোজন, সবই তো চলছে। দুদিন আগেও দক্ষিণ খানে দিনে দুপুরে গুলি করে মারা হয়েছে একজনকে। তাও আবার থানার সামনেই। বিয়ে, শপিং, জন্মদিন থেমে কি আছে কোন আয়োজন? তাহলে করোনা থামবে কেন? মৃত্যুই বা থামবে কেন? গত ২৪ ঘন্টায় কভিডে মারা গেছেন আর ৩৩ জন। আক্রান্ত প্রায় চার হাজার।
আজই রাজশাহীতে সড়ক দূর্ঘটনায় ১৭ জন অক্কা পেয়েছেন। আগের রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চার সাংবাদিককে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে ছাত্রলীগ। বায়তুল মোকাররমে পুলিশ, জনতা মুসল্লির সংঘর্ষ। অভিযোগ করা হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা পুলিশকে সাথে নিয়ে হামলা করেছে। আবার অন্য পক্ষ বলছে বিএনপি জামাআত এটা করিয়েছে। আগের দিন শাহবাগে মোদী বিরোধী আন্দোলন এর অংশ হিসেবে গরু কোরবানী করে জেয়াফত দেয়া হয়েছে। পত্রিকার পাতা জুড়ে ৫০ বছরের অর্জনের গল্প। ক্রোড়পত্র জুড়ে শুধুই ১২ বছরের উন্নয়নের ফিরিস্তি।
রাজধানীতে নেই কোন যানবাহন। রাস্তায় ভ্যাবাচ্যাকা খাচ্ছে মানুষ। এই স্বাধীনতা, এই সুবর্ণ জয়ন্তী আর এত এত আয়োজন। সাথে সামাজিক দূরত্ব মানার প্রচার প্রচারনা। আবার স্বাস্থ্যবিধি না মানার উৎসব এর কোনটারই কোন অর্থ আমি অন্তত খুঁজে পাই না।
তারপরও বলি মহাসুখে আছি। জয়তু প্রিয় বাংলাদেশ। স্বার্থক হোক এই সুবর্ণ জয়ন্তী।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।