শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত। লালমনিরহাট প্রতিনিধি: গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে লালমনিরহাট পৌরসভা এলাকার একটি ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হওয়া সেই নবজাতক কন্যাশিশুর পরিচয় মিলেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারী ) বেলা ১১টায় লালমনিরহাট সদর থানায় এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহা আলম। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ-সার্কেল) মারুফা জামাল সদর থানার ওসি (তদন্ত) শহিদুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নবজাতকের মা ইভা (১৭) নানী লুৎফা বেগম (ইভার মা) ও জৈবিক পিতা জয়নাল আবেদীন (৩০)।
প্রেস রিলিজে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফা জামাল জানান, এক দিন বয়সী নবজাতক কন্যা শিশুকে উদ্ধার করে লালমিনরহাট সদর হাসপাতালের শিশু নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। ওই দিন উদ্ধারকারী এসআই রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
তিনি আরও বলেন, নবজাতক শিশুটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীনে পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা একাধিক সময়ে হাসপাতালে গিয়ে শিশুটির খোঁজ খবর নেন এবং তাঁর নির্দেশনায় নারী পুলিশ সদস্যরা শিশুটির নিরাপত্তাসহ মাতৃস্নেহে শিশুটির লালন পালন করতে থাকে। শিশুর চিকিৎসা শেষে শিশু কল্যাণ বোর্ড, লালমনিরহাট এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ২৩ ফেব্রুয়ারী নবজাতককে প্রয়োজনীয় পুলিশ স্কটের মাধ্যমে রাজশাহী
ছোটমনি নিবাসে প্রেরণ করা হয়েছে। পরে একাধিক বিস্বস্ত সোর্সের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া সেই শিশুর মায়ের পরিচয় উৎঘাটন করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, নবজাতকের মা ইভা (১৭) শহরের সাহেবপাড়া এলাকার বাসিন্দা। সে কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্রী। তার বড় বোনের স্বামীর সাথে অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সম্পর্কের সুযোগে লম্পট দুলাভাই শারীরিক সম্পর্ক করেন এতে ইভা গর্ভবর্তী হয়। তার গর্ভবর্তী হওয়ার বিষয়টি দেরীতে বুঝতে পারায় একা একা তা ধামাচাপা দিয়ে রাখে। পরে ১৩ ফেব্রুয়ারী অসুস্থ হলে মা বিষয়টি বুঝতে পেয়ে জন্ডিসের কারনে পেটে ব্যাথা বলে সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। পরদিন ভোরে সকলের অগোচরে হাসপাতালের বাথরুমে সন্তান প্রসব হয় এবং মা ইভা, নানী (ইভার মা), ও দুলাভাই হাসপাতালের কাউকে কিছু না বলে বাচ্চাসহ হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসে এবং বাচ্চাটিকে ফেলে যায়।
উল্লেখ্য, নবজাতকের মা, নানী ও প্রাথমিকভাবে জ্ঞাত নবজাতকের জৈবিক পিতাকে শিশু উদ্ধারকারী এসআই রফিকুল ইসলামের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সময় জার্নাল/আরইউ