তোমার মায়ায়
- শেখ ফাহমিদা নাজনীন
আকাশ যখন দৃষ্টিসীমার ঐ পারে রয় মিশে,
যেমন মেলে নীলের আভা সবুজ মাঠের শেষে।
আকাশ সে তো অনেক দূরে, যায়না তাকে ছোঁয়া,
পাখি হয়ে উড়ি যদি, তবুও কেবল ধোঁয়া।
স্বপ্নালু এই চোখটা দ্যাখে, নদীর ওপার ঝুঁকে,
এত্ত বড়ো আকাশ যেন মিলছে মাটির বুকে।
ছোঁয়ার আশায় গেলাম ছুটে খেয়াটি পার হয়ে,
দেখি, সে মিল মরীচিকা, পালিয়েছে দূর গাঁয়ে।
এমনি করেই এই পৃথিবীর সবটা এলে ঘুরে,
দেখবো, আকাশ পালায় কেবল, তেমনি থাকে দূরে।
হঠাৎ যদি মাঝরাত্তির আচমকা যাই জেগে,
খাপছাড়া সব ভাবনা দিয়ে মন ভরে আবেগে।
দেখবো ঘরের আগল দেয়া, বন্ধ বাতায়নে,
কি আচানক অস্বস্তিতে ধাক্কা দেবে মনে।
গাছের পাতার ছটফটানি, হাওয়ার শিরশিরানি,
মনে হবে ঝুম বৃষ্টি, বইছে বাদলা পানি।
সেই বিভ্রমে লাফিয়ে উঠে জানালা খুলে দেখি,
বৃষ্টি কোথায়? বাইরে কেবল অমাবস্যার ফাঁকি।
সবই কেবল স্বপ্নলোকের অলীক বসবাস,
যা ছুঁতে যাই, হাওয়ায় মিলায়, ফুরায় মনের আশ।
তবুও এমন স্বপ্ন দেখি, শেষরাত্রের কালে,
পৃথিবীটা ঘুমায় যখন অলসতার জালে।
অস্থির মন জাগে তখন কিবলামুখী হয়ে,
আস্থা থাকে মনের ভেতর, স্বপ্ন বুকের বায়ে।
স্বপ্ন বোনে সে নির্জনে, তোমায় পাওয়া চাই,
বিশ্বপ্রভু, ডাকলে যেন একটু সাড়া পাই।
তুমিতো নও দূরের আকাশ, অলীক ভ্রমের বৃষ্টি,
তুমি আমায় জড়িয়ে থাকো, আমি তোমার সৃষ্টি।
যত্নে গড়া পুতুল আমি, তোমার মায়ায় আছি,
জীবন-মৃত্যু গোল্লায় যাক, তোমায় পেলেই বাঁচি।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২।