খানদানী পরিবার
- শেখ ফাহমিদা নাজনীন
এই যে ভাবি, আছেন কেমন? কতদিন পরে দেখা,
আপনার কথা মনে হতো খুব, একাকিনী পথরেখা।
রোজ ভোরবেলা দলবেঁধে হাঁটি স্বাস্থ্য সুরক্ষায়,
সব্বাই ছিলো, ক'টা দিন শুধু আপনারই দেখা নাই।
কতো কথা মনে উপচে পড়ছে, কতো কথা জমে গেল,
গত সপ্তায় বোনপোর শালা কানাডা পাড়ি জমালো।
দেখাই হলোনা, বলবো কিভাবে? চাচাতো বোনের বাড়ি,
প্রতিমন্ত্রীর ছেলে এসেছিলো, কতো দামী তার গাড়ি!
গায়ের কোটটা লাখ টাকা হবে, যত বলি কম করে,
আসলে এসব নতুন কিছুনা আমাদের পরিবারে।
খালা শাশুড়ীর দেবরের ছেলে সিনেমাতে কাজ করে,
নিকটাত্মীয়, ভাবলেই যেন গর্বে বুকটা ভরে।
জানেন তো ভাবি, তেল মন্ত্রীর ফুপাতো ভাইয়ের শালা,
লন্ডনে থাকে, তাদেরই পড়শী আমার চাচাতো খালা।
খালার সাথে তো দেখাই হয়না বছর পনেরো পর,
শুনলাম নাকি দেশে ফিরবেন, ঘুরবেন বাড়িঘর।
ভাবছি এবার দেখা করবই ব্যবস্থা যদি হয়,
ছোট ছেলেটাকে বিলাতে পাঠাতে অন্তরে সাধ রয়।
কতো কথা হয় আপনার সাথে, অথচ হয়নি বলা,
আফ্রিকা থেকে গত মাসে এলো হীরার জড়োয়া মালা।
ঐ যে আমার সেজ ননদের দেবরের বড় মেয়ে,
তারই জন্যে কিনে আনা হলো, এ-ই মাসে তার বিয়ে।
বলবো কি ভাবি, আত্মীয় সব মন্ত্রী-মিনিস্টার,
আমরা তো খুব নামকরা লোক, খানদানী পরিবার।
এতসব নিয়ে গর্ব করিনা, করিনা অহংকার,
তবু বলি ভাবি, এমন আত্মীয় ক'জনের আছে আর?
শেখ ফাহমিদা নাজনীন
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২