এহসান রানা, ফরিদপুর:
ফরিদপুরের মধুখালীর সাতটি গ্রামের মানুষের চলার একমাত্র অবলম্বন/ ভরসা ভাঙাচোরা বাঁশের সাঁকো। জানা যায়, দীর্ঘ চার যুগের অধিক সময়েও ওই স্থানে একটি ব্রিজ কপালে জোটেনি ৭ গ্রামের মানুষের। সেতুর অভাবে বছর জুড়েই ভোগান্তি আর ঝুঁকি পোহাতে হয় তাদের। ফলে নানা সমস্যার পাশাপাশি কষ্টের যেন শেষ নেই। এভাবেই চলছে ৫০ বছর ধরে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অত্র এলাকার মানুষ এই সাঁকো পারাপারের মাধ্যমে দৈনন্দিন কাজকর্ম ও চলাচল করে থাকে। এছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সময় মতো বাজারে আনা-নেওয়া করা যায় না। বর্ষাকালে যোগাযোগ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শিক্ষার্থী ও অসুস্থ ব্যক্তিসহ এলাকাবাসীকে চরম সমস্যায় পড়তে হয়।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রায়পুর, বকশিপুর, দামদরদি, পাইকান্দি ও বারোভাগিয়াসহ আশপাশের সাতটি গ্রাম। এই সাতটি গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে কুমার নদী। এই নদীতে দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ব্রিজ না থাকায় ভোগান্তি পোহাচ্ছে সাতটি গ্রামের শত শত পরিবার ও হাজার হাজার মানুষ।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কালিগঙ্গা থেকে শ্রীরামপুর এলাকার
চলার পথে কুমার নদী। কুমার নদের ওই স্থানে বাঁশের সাঁকোই আশপাশের সাতটি গ্রামবাসীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। আর এভাবেই চলছে ৫০ বছর। বাঁশের সাঁকো মেরামতের কিছুদিনের পরই তা ঝঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ভেঙে যায়। নড়বড়ে হয়ে পড়ে। কোন উপায়ান্ত নেই বলে ঝুঁকি নিয়ে চলতে গিয়ে প্রতিদিনই ঘটে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা। আর এভাবে প্রায়ই বাশের সাঁকোটি মেরামতের অভাবে চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রাজ্জাক , মজিদ মোল্লা, সিরাজুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন সাঁকোটির বেহাল দশা। বাঁশের তৈরি সাঁকোটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেকে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকেই। ঝুঁকি আর ভয় নিয়ে বাধ্য হয়ে এ পথে চলতে হয়। জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারংবার ধর্ণা দিয়েও কোন ফল হয়নি। তাদের দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অতিদ্রুত এখানে একটা ব্রীজ নির্মাণ করে এলাকাবাসীর জীবন ও মানের উন্নয়ন করবে।
ফরিদপুরের মধুখালী সাবরেজিস্টার অফিসের দলীল লেখক অজিত কুমার ভৌমিক ও আয়েশা সামি কলেজের প্রভাষক সুজিত কুমার ঘোষ জানান, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এ পথ দিয়ে চলাচল করে। এছাড়াও প্রতিবছর কালিগঙ্গায় মাঘি পূর্ণিমা স্নান উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে। কিন্তু একটি ব্রিজের অভাবে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণের দীর্ঘদিনের দাবি এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন বলেন, এলাকাবাসীর এখানে একটি ব্রিজের দাবি দীর্ঘদিনের। সংশ্লিষ্টদের কাছে এ বিষয়ে বারবার আবেদন জানানো হয়েছে কিন্ত কোন ফল হয়নি।
এমআই