বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

আমেরিকার পরে চীন কি বিশ্ব শাসন করবে?

বুধবার, মার্চ ১৬, ২০২২
আমেরিকার পরে চীন কি বিশ্ব শাসন করবে?

মেজর জেনারেল (অব.) আ ল ম ফজলুর রহমান : 

এটা একটা বিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দেয়া খুব মুশকিল। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পরে সমস্ত  পশ্চিমা বিশ্ব একজোট হয়ে রাশিয়াকে এক ঘরে করে তার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক  নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা মূলত ও মুখ্যত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। যদি ইউক্রেন যুদ্ধ অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধের কারণে দীর্ঘায়িত হয় এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে এই দীর্ঘ সময়ে যদি রাশিয়া ইউক্রেন জয় করতে ব্যর্থ হয় তাহলে রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পরাজিত হবে তাই নয় রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়বে। এটা যদি হয় তাহলে রাশিয়া ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে এবং ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির দাবি মেটাতে রাশিয়া পথের ফকিরে পরিণত হবে। 

যদি উল্টোটা হয়? যেমন রাশিয়া তার যুদ্ধের পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউক্রেন জয় করতে সক্ষম হল। পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা রাশিয়াকে কাবু করতে পারল না। তাহলে কি হবে? হবে এই রাশিয়া বিনা যুদ্ধে সমস্ত ইউরোপকে জয় করে নেবে বা সমস্ত ইউরোপের উপরে রাশিয়ার প্রভাব ও প্রতিপত্তি প্রতিরোধ্য ভাবে বেড়ে যাবে। ফল দাঁড়াতে পারে  ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমেরিকার পরিবর্তে রাশিয়াকে মুরুব্বী হিসেবে গ্রহণ করে রাশিয়ার উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়বে। ন্যাটোর কার্যকারিতা লোপ পাবে। রাশিয়ার নেতৃত্বে গঠিত হবে নতুন সামরিক জোট। এটা যদি সম্ভব হয় তাহলে রাশিয়া হতে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ বিশ্বের এক নম্বর পরাশক্তি এবং নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার প্রবর্তক ধারক ও বাহক। আমরা লক্ষ্য করেছি ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া বাড়তি পাওনা হিসেবে পেয়েছে সমস্ত মুসলিম বিশ্বের সমর্থন। ভবিষ্যতে ইউরোপ ও মুসলিম বিশ্ব রাশিয়ার সাথে হাত মেলালে রাশিয়ার  এক নম্বর বিশ্বশক্তি হওয়াতে কোনো বাধা থাকবে বলে মনে হয় না
তাহলে লেখার শিরোনামে চীনের বিশ্বশক্তি হিসেবে ভবিষ্যৎ বিশ্বকে শাসন করার কথা কেন বললাম? বললাম এই জন্য যে এই মুহূর্তে যখন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা বিশ্বের চাপিয়ে দেয়া সর্বাত্মক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আছে তখন চীন সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থেকে তার বিশ্বময় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড অবাধে চালিয়ে যাচ্ছে। এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে অর্থনৈতিকভাবে মহাশক্তিশালী চীন হয়তো ভবিষ্যত বিশ্বকে শাসন করবে কারণ চীনের অর্থ আছে , অর্থ লগ্নী করার সামর্থ্য আছে। একটা কথা ঐতিহাসিকভাবে সত্য যে কেবল অর্থ সম্পদ কোন ব্যাক্তি বিশেষ বা দেশকে অন্যসব ব্যাক্তি বা দেশকে শাসন করার গ্যারান্টি দেয় না। যেমন জগৎশেঠের অনেক অর্থ ছিল কিন্তু ইংরেজরা তাকে বাংলা শাসন করার নবাবীতে ভূষিত করেননি। যেমন আমরা যদি বাংলাদেশের দিকে তাকাই তাহলে দেখব বাংলাদেশের যারা শীর্ষ ধনী তারা হাজার হাজার কোটি টাকা এবং সম্পদের মালিক কিন্তু এদের কেউ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকার প্রধান নয়। আমরা যদি গত শতকের বিশ্ব ব্যবস্থার দিকে তাকাই তাহলে দেখব বিশ্বের একনম্বর  শক্তি আমেরিকা সবসময় রাশিয়ার সঙ্গেই বা সোভিয়ে ইউনিয়নের সঙ্গেই শক্তির বোঝাপড়া করেছে। চীনকে ধর্তব্যে নেয় নাই। যেমন আমেরিকার ন্যাটো চুক্তির বিপক্ষে   

The North Atlantic Treaty Organization, also called the North Atlantic Alliance, is an intergovernmental military alliance among 28 European countries and 2 North American countries. Established in the aftermath of World War II, the organization implements the North Atlantic Treaty, signed 4 April 1949. 
Founded: April 4, 1949, Washington, D.C., United States
Headquarters: Brussels, Belgium

 সোভিয়েত ইউনিয়নের ওয়ারসপ্যাক্ট  প্রণীধানযোগ্য।

The Warsaw Treaty Organization, officially the Treaty of Friendship, Cooperation and Mutual Assistance, commonly known as the Warsaw Pact, was a collective defense treaty signed in Warsaw, Poland, ... 
Founded: May 14, 1955, Warsaw, Poland
Dissolved: 1 July 1991
Headquarters: Moscow,

স্ট্রর্টিজিক আর্মস লিমিটেশন টক আমেরিকা সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথেই করেছিল। চীনের সাথে নয়।

The Strategic Arms Limitation Talks were two rounds of bilateral conferences and corresponding international treaties involving the United States and the Soviet Union. The Cold War superpowers dealt with arms control in two rounds of talks and agreements: SALT I and SALT II. 
Start date: May 26, 1972.

এই যে ঠান্ডা যুদ্ধ এটাও সংঘটিত হয়েছিল আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে। অর্থাৎ বিশ্ব ব্যবস্থায় আমেরিকার প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিল এবং আছে সোভিয়েত ইউনিয়ন বর্তমানে রাশিয়া। অতি সম্প্রতি আমেরিকা কর্তৃক কোয়াড গঠনের পরে

The Quadrilateral Security Dialogue, colloquially the Quad or QUAD, is a strategic security dialogue between Australia, India, Japan, and United States that is maintained by talks between member countries. 
Established: 2007 (1st time); lasted until 2008; 2017 (reestablished after negotiations in November)
Abbreviation: Quad
Region: Indo-Pacific

 দক্ষিণ চীন সাগরে সম্ভাব্য নৌযুদ্ধ এড়াতে চীন মিত্র হিসেবে রাশিয়ার দিকেই হাত বাড়িয়েছিল। এবং তাতে রাশিয়ার সাড়া ছিল ইতিবাচক। আমার একটি লেখায় আমি উল্লেখ করেছি যে, যদি দক্ষিণ চীন সাগরে কোয়াড কান্ট্রি সমূহের নৌ শক্তির সাথে চীনের মোকাবেলা হয় তবে সেই যুদ্ধে চীনের পরাজয় হবে। কারণ আমেরিকা ও জাপানের নৌ শক্তিকে মোকাবেলা করার মতো নৌশক্তি চীনের নাই। তাই চীন তড়িঘড়ি করে রাশিয়ার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ায়। রাশিয়া চীনের বন্ধুত্বের হাতকে ধারণ করে চীনকে এক প্রকার পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। 

পরিশেষে বলবো আগত বিশ্বে চীনকে আমরা নবাব সিরাজউদ্দৌলার টাকা লগ্নিকারী বিশ্ব জগৎশেঠ বলতে পারি তবে বিশ্বনবাব নয়।

লেখক : সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক। 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল