ডা. মাহমুদুর রশিদ :
২৫ শে মার্চের কালরাত্রি যারা দেখেননি-ঢাকা কিংবা অন্যান্য বড় সিটিতে বসবাসরত তারা এখন অনুভব করতে পারেন কি ভয়াবহ ছিল সেই ১৯৭১ সালের কালরাতটি-কারণ করোনা মহোমারির দ্বিতীয় ঢেউ কিছু বুঝে না উঠতেই আমাদের সকল হিসাব পাল্টে দিয়ে প্রতিদিন অজানা এক আতঙ্কে আমাদের সকলকে নিজ ঘরে পরবাসি করে ফেলেছে-তবুও এই নিশ্চয়তা নেই যে আগামীকাল আমাদের জন্য শুভ দিন।
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু হওয়া করোনা- এই মার্চে এসে হঠাৎ এমন বিষ ছড়াবে, আমাদেরকে কেউ কি সতর্ক করেছেন?
না, করেন নি। তা হলে কেন করেননি? জ্ঞানের অভাব নাকি অভিজ্ঞতার অভাব? না কি মুখে মাস্ক পড়া ছিল বলে আমরা কথা বলতে পারিনি?
রাষ্ট্রের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট যারা সেই যুব সমাজ আজ দিন দিন করোনার বিষে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর তাদের পরিবার সর্বশান্ত হচ্ছে আই.সি.ইউ.র ভাড়া দিতে দিতে। তারপরও অনেকে আবার আই.সি.ইউ. পাচ্ছেন না। ভাবা যায়-একটি জীবন বাঁচানোর জন্য একটি পরিবার কত্ত পেরেশানি পোহাচ্ছেন?
বন্ধুগণ আপনারা হয়তো বলবেন পরিবারই কি পেরেশানি পোহচ্ছেন। রাষ্ট্র কি পেরেশানিতে নেই?
রাষ্ট্র অবশ্যই আছে কিন্তু সেই পেরেশানি পোহানোর দায়িত্ব যাদের তারা তা না পোহাইয়া অন্যরা পোহাচ্ছেন। ফলে সমন্বিত কোন ফল আজ দৃশ্যমান হচ্ছে না।
গতবছর আমাদের একজন বড় কর্মকর্তা সত্য কথা বলার কারণে চাকুরি হারালেন। আজ তো তার কথাই সত্য হলো। সত্য কথা শুনলে তো পণ্ডশ্রম করে মিথ্যা বলা লাগে না। মস্তিস্কের উপর চাপ পড়ে না বরং ভবিষ্যতের জন্য সুন্দর এবং দরকারী পরিকল্পনা করতে পারি।
মানুষ যা না ভাবে প্রকৃতিতে তাই ঘটতে পারে। যেমন কেউ যদি বলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে না হলেও আমরা আক্রান্ত হবোনা-আমি তাকে বলবো মূর্খ। তাই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে এবং কাল যদি সেটা হয় পরিস্থিতি সামাল দেবার মতো কি কি আছে তার হিসাব অবশ্যই প্রতিদিন জেনে নিতে হবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞান পৃথিবীতে সবচেয়ে দ্রুত পরিবর্তনশীল একটি বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞানটি দ্বারা যদি আমরা শতায়ু লাভ করতে চাই. তবে এর সকল প্রকার সিদ্ধান্ত ও দায়িত্ব কারা পালন করবে, রাষ্ট্রকে অবশ্যই তা ভাবতে হবে।
দেশের খ্যাতিমান পাবলিক এক্সপার্ট, ক্লিনিসিয়ান, এক্সপার্ট নার্স, হেলথ ইকোনোমিষ্টসহ বায়োটেকনোলজিক্যাল সকল ব্যক্তিবর্গ স্বাস্থ্য সেবার সকল পলিসি থেকে শুরু করে তার ইমপ্লিমেন্টেশন এবং ফলাফল পর্যবেক্ষনের দ্বায়িত্ব আজই তাদেরকে দিতে হবে। এবং এ ব্যপারে রাষ্ট্রের আপোষ করা চলবে না।
কেননা জনগনের জন্য রাষ্ট্র আর রাষ্ট্রের সুস্থতার জন্য চিকিৎসা শাস্ত্র।