নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ মঙ্গলবার (৩১ মে) বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও প্রতিবছর দিবসটি উদযাপন করা হয়। তামাক চাষ, তামাকজাতপণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার এবং তামাকের বর্জ্য পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর সে বিষয়ে জনসাধারণ এবং নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘টোব্যাকো: থ্রেট টু আওয়ার এনভায়রনমেন্ট’। বাংলাদেশে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে ‘তামাকমুক্ত পরিবেশ, সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্য নিয়ে।
সিগারেট, বিড়ি, জর্দাসহ যেকোনও তামাকপণ্য বিক্রি করতে বিক্রেতাকে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এমনকি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, খাবারের দোকান, মুদি দোকান বা রেস্টুরেন্টকে তামাকপণ্য বিক্রির লাইসেন্সই দেওয়া হবে না। হোল্ডিং নম্বর ছাড়াও ইস্যু হবে না লাইসেন্স। এছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকপণ্য বিক্রির অনুমতিও থাকবে না।
জানা গেছে, ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই ঘোষণা বাস্তবায়নে লাইসেন্সের ওই বাধ্যবাধকতা বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি এখনও।
২০১৯ সালের মাঝামাঝি সরকারের নেওয়া ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা’র খসড়ার ওপর বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত সংগ্রহ করছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। তবে সেটি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
দেড় বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে। কার্যক্রমটি আর কতদিন চলবে সে সম্পর্কে ধারণা নেই কারও। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, ‘কাজ চলছে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, সবে মন্ত্রণালয়ে যোগদান করলাম। এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।
সূত্র জানিয়েছে, সরকারের প্রাথমিক পরিকল্পনা হলো ২০৪০ সাল নাগাদ দেশে তামাকসেবীর হার পাঁচ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা। এটি করতে হলে তামাক উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও তামাকসেবীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। মূলত বাজারজাতকরণ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যেই তামাকপণ্য বিক্রিতে লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করার এমন পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
কেউ বলছেন, তামাক কোম্পানিগুলোর স্বার্থেই একটি মহল সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি দীর্ঘায়িত করছেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, তামাকপণ্য বিক্রি ও বিপণন নিয়ন্ত্রণে দেশে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা নেই। এ কারণেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রের আশপাশের এলাকা, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, খাবারের দোকানে অনিয়ন্ত্রিতভাবে তামাকপণ্য বিক্রি হচ্ছে। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকার খসড়া তৈরির মধ্য দিয়েই নীতিমালা করা সম্ভব হবে।
বলা হয়েছে, যাদের ট্রেড লাইসেন্স আছে, তাদেরও সিগারেট, বিড়ি, জর্দা বিক্রির জন্য আলাদা লাইসেন্স নিতে হবে। নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে এক বছর মেয়াদি ওই লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে। মুদি দোকান, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্টুরেন্ট তামাকপণ্য বিক্রি করতে পারবে না।
এসব বিধান রেখে ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা’র খসড়া তৈরি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। খসড়াটির ওপর এখন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামত সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সময় জার্নাল/এলআর