ডা. শেখ তানজিলা রহমান :
চোখ ভেঙে কান্না আসছে...
আধা ঘণ্টার ব্যবধানে দুজন রোগী মারা গেলেন হাতের উপর..
যেসব রোগী আসছেন সেসব রোগীর স্বজনেরা জেনেই নিয়ে আসছেন যে বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম..
চিকিৎসকরাও এটা জেনেই চিকিৎসা শুরু করছেন যে, তাদের হাতে বেশি কিছু করার নাই..
তবুও শেষ চেষ্টা করছি..
হাই ফ্লো অক্সিজেন (৪০-৫০ লিটার/মিনিট) সাপ্লাই দিয়েও স্যাচুরেশন ৬৫-৭০ উঠে খুব কষ্টে..
চোখের সামনে একটু বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে না পারার কষ্টে ডাঙায় তোলা মাছের মত ছটফট করে মারা যাচ্ছে মানুষ..
দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিচ্ছু করতে পারছি না..
বড্ড অসহায় লাগছে..
এত অসহায় আর কখনো লাগেনি..
মেন্টাল ট্রমার মত হয়ে যাচ্ছে ডাক্তারদের জন্য ব্যাপার টা..
যমে মানুষে টানাটানি করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছি..
একটার পর একটা ডেথ সার্টিফিকেট সাইন করতে হাত কাঁপছে...
বিশ্বাস করেন একজন ডাক্তারের জন্য এর থেকে অসহায় মুহুর্ত আর কিছু নেই....
প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা..নিজদের জানের মায়া ও করছি না অনেক সময়..
রোগী বেশী খারাপ হয়ে গেলে সময় অপচয় করছিনা।
প্রোপার পারসোনাল প্রটেকশন, গ্লাভস, মাস্ক এর চিন্তা না করেই রোগী ধরে ফেলছি..
নিজেরা সাবধান না হলে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ডাক্তার এর ও সাধ্যি নাই আপনাকে বাঁচানোর..
কোন ওষুধে কাজ হবেনা যদি আল্লাহ মৃত্যুর মুখ থেকে টেনে না আনেন আপনাকে..
আই সি ইউ,অক্সিজেন সব দুষ্প্রাপ্য এখন..
নিজে সাবধান হউন,উপরওয়ালা কে ডাকেন..
কোভিড এর ভয়াবহতা সম্পর্কে ততক্ষণ বুঝবেন না যতক্ষণ না নিজে বা কাছের কেউ আক্রান্ত হবে(আল্লাহ মাফ করুক)
কিন্তু ততক্ষণে অনেক বেশি দেরী হয়ে যাবে..
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের সবাই কে রক্ষা করুন এই মহামারী থেকে...
আমীন.