আলী আহমাদ মাবরুর:
বাইডেনের মধ্যপ্রাচ্য সফরের রেশ শেষ না হতেই এবার পুতিন মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করলেন। বাইডেন তার সফরে ফোকাস করেছেন সৌদিআরব ও ইসরাইলকে। তিনি এই দুটো দেশে গিয়েছেন। তেল পাওয়ার জন্য সৌদিআরবের পুরনো অপরাধ ক্ষমা করতেও তিনি পিছপা হননি। নির্মমভাবে মৃত্যু বরণ করা খাশোগীর ফাইল আপাতত বালিশের নীচেই চাপা পড়ে গেলো বলে মনে হয়। বাইডেনের সফরের অর্জন হলো, সৌদি আকাশসীমা ইসরাইলের জন্য উম্মুক্ত করা, যুক্তরাষ্ট্রে কম দামে সৌদি তেল সরবরাহের নিশ্চয়তা পাওয়া ইত্যাদি।
আর পুতিন তার সফর শুরু করেছেন ইরান দিয়ে। আগামীতে বিশ্ব সমীকারণে সৌদি, আমীরাত ইসরাইল কানেকশনের বিপরীতে ইরান বড়ো রোল প্লে করবে বলেই মনে হচ্ছে। বিষয়টি আরো পরিস্কার হয়েছে এই জন্য কারণ পুতিন এমন সময়ে ইরান সফর করছেন, যখন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানও ইরানে রয়েছেন। ইরানে পুতিন ও এরদোয়ানের বৈঠকও হয়েছে। আবার ইরানের প্রেসিডেন্ট ও সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামনেয়ীর সাথে দুই নেতা আলাদা আলাদা বৈঠকও করেছেন।
ইরান, তুরস্ক ও রাশিয়া মিলে বিশ্বের খাদ্য শস্য সংকট নিরসনে একটি উদ্যোগ নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। যদি তাদের উদ্যোগ সফল হয়, খাদ্য ঘাটতি একটু হলেও কমে, কিংবা কম দামে বিশ্ববাসী খাবার পায়, তাহলে এই তিন দেশীয় জোট গ্লোবাল অর্ডারে অনেকটা এগিয়ে যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তেমনটা হলে এই দেশ তিনটির ওপর বিশ্বের বৃহৎ অংশের মানুষ হয়তো নির্ভরও করতে শুরু করবে। আর সাথে যদি চীন যোগ দিয়ে দেয়, তাহলে তো কথাই নেই। মনে হচ্ছে, ইরান, তুরস্ক রাশিয়া ও চীনের জোট আগামীতে শক্তিশালী হবে। রাঘব বোয়ালদের তেল রাজনীতিতে তিক্ত হওয়া সাধারণ মানুষও বিকল্প হিসেবে এই জোটকে সমর্থন করবেন বলেও অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন।
লেখকঃ আলী আহমাদ মাবরুর, সাংবাদিক।