সর্বশেষ সংবাদ
সময় জার্নাডেস্ক: ধর্মীয় আদর্শ মেনে রাজনীতি করা দোষের কিছু নয়, তবে অযাচিতভাবে বা অপ্রাসঙ্গিকভাবে রাজনীতির সাথে ধর্মীয় আচার ও বিশ্বাসকে মিশিয়ে ফেলা অপ্রয়োজনীয়। "নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর" স্লোগানটি প্রতিটি মুসলমানের প্রানের স্লোগান। এর দ্বারা একক আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা হয়। তাওহীদে বিশ্বাস মুসলিম হওয়ার প্রধানতম শর্ত। আর অমুসলিমরা তাওহীদে বিশ্বাস করে না বলেই অমুসলিম। আমাদের বেশিরভাগ ও প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলে সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণ রয়েছে। আমি আপনি কি পারি তাদেরকে রাজনৈতিক মঞ্চে উঠিয়ে তাওহীদের স্লোগান দিতে বাধ্য করতে বা চুপ করে সেই শোনাতে ?.. ইসলাম পুর্নাঙ্গ জীবন-বিধান। রাজনীতি ইসলামের বাইরের কোন বিষয় নয়। একজন মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকার আবার একজন মুসলিমের ও অমুসলিমের অধিকার এবং অমুসলিমের সাথে মুসলিমের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহাবস্থান কেমন হবে সবই ইসলাম বাতলে দিয়েছে। অর্থাৎ স্থান, কাল, পাত্রভেদে একজন মুসলিমের করনীয় সম্পর্কে ইসলামে যথেষ্ট বিবৃত আছে। সকল ধর্মের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করা একটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশে নারায়ে তাকবির স্লোগান তোলা হলে, তখন অমুসলিমরা কি বলবে? অথবা তারাও যদি প্যারালাল কোন স্লোগান (যেমন জয় শ্রীরাম) দিতে চায় তা বাকিরা কিভাবে গ্রহন করবে বা কিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে আমরা ভেবে দেখেছি কি? অবশ্য কিছু ইসলামি রাজনৈতিক দল আছে যারা শুধু মুসলমানের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাদের সাথে অমুসলিমদের কোন রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের দেশ বলে তারা রাজনীতি করতে পারলেও তাদের রাজনীতি এক পাক্ষিক। এটা গণতন্ত্রের ত্রুটি। এবং এসব ধর্মভিত্তিক দলের ভিত্তি কতটা মজবুত তা সবার জানা। গনতন্ত্র নিয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত ভিন্ন। আমি খেলাফত বা ইসলামী শাসনব্যবস্থাকে সর্বাধিক আদর্শ ও আধুনিক শাসনব্যস্থা মনে করি। গনতন্ত্রে সকল মানুষের সমান অধিকার বলা হয়(মানা হয় না), আর ইসলামী শাসনব্যাবস্থায় একই যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষের একইরকম অধিকার থাকে। একজন চোর প্রতিনিধি হিসেবে একজন চোরকেই চাইবে, তখন চোরের সংখ্যা বেশি হলে ঐ অঞ্চলে সংখ্যালঘু ভালো মানুষরা চোরের শাসনে বসবাস করতে বাধ্য হয়। আর চোরের শাসনামলে চোরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, কৌশল ও প্রকারভেদে বৈচিত্রময় ও হাইব্রিড চোরের উদ্ভব হবে এটাই স্বাভাবিক। সারাবিশ্বে বেশির ভাগ দেশে চোর, গুন্ডা ও বদমায়েশের শাসন চলছে। অনেকে ইসলামি শাসন ব্যবস্থার ত্রুটির কথা বলতে পারেন তবে তা ইসলামি শাসন ব্যবস্থার ত্রুটি নয়, শাসক ও তার নীতির প্রয়োগের ত্রুটি। গণতন্ত্র ও খেলাফতের মাঝে আরো অনেক পার্থাক্য বিদ্যমান। তবে তা আমার আলোচ্যবস্তু নয়। বাংলাদেশে বর্তমান বাস্তবতায় গণতন্ত্রের মধ্যে থেকেই সকল পরিবর্তনের চেষ্টা করতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধন করে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা করার আগ পর্যন্ত প্রচলিত ধারার বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় আইন মেনে চলা ফরজ। আওয়ামী লীগ সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে মুসলিম বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ করেছে। আওয়ামী হওয়ার পরও একসময় তারা সভা-সমাবেশে পোস্টারে নারায়ে তাকবির স্লোগান ব্যবহার করতো। এখন করে না। এটা তাদের রাজনৈতিক শুদ্ধাচার বলবো। বিএনপি কোন কালে এই স্লোগান ব্যবহার করেছে বলে ইতিহাস নেই। এই দুটি দলের কোনটিই ইসলামি শাসনব্যবস্থায় বিশ্বাসী নয়। পশ্চিমা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই তাদের লক্ষ্য (যদিও মুনাফেকি করে গণতন্ত্রের খোলসে কমবেশি স্বৈরাচারী আচরণ উভয়েই করেছে)। তবে বিএনপির মতো লিবারেল গণতান্ত্রিক দলের সমাবেশে এমন ধর্মীয় স্লোগান আসাটা একটু বিব্রতকরই। এবং এ বিব্রত হওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে বিএনপিও প্রকাশ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ বলে কথা। এখানে রাজনীতি করার তো আর কিছু নেই। তাই যখন তখন পান থেকে চুন খসলেই চেতনার রাজনীতি শুরু হয়। নারায়ে তাকবির স্লোগান অন্য ধর্মের ভাইদের জন্য প্রযোজ্য নয় বলেই এটা রাজনৈতিক মঞ্চেও প্রযোজ্য নয়, এতটুকুই। তবে এটাকে পাকিস্তানি স্লোগান বা পাকিস্তানি আদর্শের পরিচায়ক, রাজাকারের স্লোগান বলা রাজনৈতিক ভন্ডামি।এটি বিশ্ব মুসলিমের স্লোগান, আমাদের বিশ্বাস এবং তাওহীদী জনতার উজ্জীবনী গান। এটিকে অমর্যাদাকর ভাবে ব্যাখা করা ধৃষ্টতা, কুমতলব। "নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর" স্লোগান ছিল, আছে এবং চিরকাল থাকবে ইনশাআল্লাহ।। এসএম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল