স্পোর্টস ডেস্ক:
বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে ব্রাজিল। রিচার্লিসনের জোড়া গোলে সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়েছে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। দলের দুর্দান্ত জয়ের পরও সেলেসাও শিবিরে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে নেইমারের চোটে। গোড়ালির চোটে ব্রাজিলের সেরা তারকা বিশ্বকাপের বাকি অংশে খেলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জেগেছে শঙ্কা।
বৃহস্পতিবার রাতে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৬২তম মিনিটে রিচার্লিসনের গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। ৭২তম মিনিটে দুর্দান্ত বাইসাইকেলে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এই টটেনহ্যাম হটস্পার ফরোয়ার্ড। এর মাঝে ৬৭ তম মিনিটে সার্বিয়ান ফুলব্যাক মিলেনকোভিচের কড়া ট্যাকেলে ডান পায়ের গোড়ালি মচকে যায় নেইমারের। এর ১৩ মিনিট পর পিএসজি তারকাকে তুলে নেন ব্রাজিল কোচ তিতে। ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায় নেইমারকে।
ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার ম্যাচশেষে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে বেঞ্চেই আমরা চিকিৎসা শুরু করেছি। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হবে। আগামীকাল (আজ) আরেকবার চোট পরিস্থিতি দেখা হবে। আমরা অপেক্ষা করছি। আগেভাগে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
ব্রাজিল কোচ তিতে অবশ্য আশার বাণী শুনিয়েছেন। ম্যাচশেষে তিনি বলেন, ‘নিশ্চিত থাকতে পারেন সে বিশ্বকাপে খেলবে।’ তবে ব্রাজিলিয়ান গণমাধ্যম গ্লোবো জানিয়েছে, চোট সারিয়ে উঠতে বেশ সময় লাগতে পারে নেইমারের। চোট কতটা মারাত্মক তা নিশ্চিত হওয়ার পর সেরে ওঠার সময়টা নির্ধারণ করা হবে।
ব্রাজিলের অর্থোপেডিকস ও ট্রমাটোলজি সোসাইটির (এসবিওটি) নির্দেশনা অনুযায়ী নেইমারের চোটের তীব্রতাকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত গোড়ালির লিগামেন্টে টান পড়লে সেটি গ্রেড ওয়ান ইনজুরি। দ্বিতীয়ত লিগামেন্ট আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে গ্রেড টু ইনজুরি। তৃতীয়ত লিগামেন্ট পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটি গ্রেড থ্রি পর্যায়ের ইনজুরি। হাঁটতে কষ্ট হলে এবং গোড়ালিতে হাড়ের জোড়ায় ব্যথা অনুভব করলে এক্স-রে ও অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়। এসওবিটির মতে, আঘাত মাঝারি মাত্রার হলে পুরোপুরি সুস্থ হতে এক থেকে দুই সপ্তাহ প্রয়োজন হতে পারে। ব্রাজিলের গ্রুপপর্বের ম্যাচ মিস করতে পারেন নেইমার। আর চোট গুরুতর হলে বিশ্বকাপও শেষ হতে পারে। ব্রাজিল দলের ডাক্তার লাসমার বলছেন, নেইমারের গোড়ালির চোটের মাত্রা বুঝতে ৪৮ ঘণ্টা লাগবে।
২০১৯ সালে কাতারের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে এই ডান পায়েই চোট পেয়েছিলেন নেইমার। পা মচকে যাওয়ায় কোপা আমেরিকা খেলতে পারেননি তিনি। তখন ডাক্তাররা জানিয়েছিল নেইমারের গোড়ালির লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে। সুস্থ হয়ে উঠতে নেইমারকে তখন ক্রাচ ব্যবহার করতে হয়েছে। পায়ের ওপর ভর দিতে পারতেন না তিনি। সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে একই জায়গায় ব্যথা পেয়েছেন নেইমার।
২০১৪ বিশ্বকাপেও চোটের কবলে পড়ে ছিটকে যান নেইমার। কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে মেরুদণ্ডের চোটে পড়েছিলেন তিনি। সেই ইনজুরি সারিয়ে উঠতে বেশ কয়েক মাস লেগেছিল নেইমারের।
এমআই