স্পোর্টস ডেস্ক:
টানা পাঁচ জয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ইতিহাস গড়া হয়ে গেল মাশরাফির দলের। সিলেট স্ট্রাইকার্স পেছনে ফেলেছে আইপিএলের চেন্নাই সুপার কিংস, বিগ ব্যাশের হোবার্ট হারিকেনস, সিপিএলের বার্বাডোস ট্রাইডেন্টস ও এসএলপিএলের দল জাফনা স্তালিওন্সকে।
দাপুটে জয়ে শুরু করেছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। এরপর কেবল জয়ের হাসিই হেসে গেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। তাদের সামনে বাধার দেয়াল তুলতে পারেনি কোনো প্রতিপক্ষই। পঞ্চম ম্যাচে ঢাকা ডমিনেটর্সের বিপক্ষেও উড়লো সিলেটের বিজয় নিশান। আর টানা পাঁচ জয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ইতিহাস গড়া হয়ে গেল তাদের। নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে প্রথম হারের স্বাদ নেওয়ার আগে সর্বোচ্চ ম্যাচ জেতার রেকর্ড এখন সিলেটের।
সোমবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ম্যাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঢাকা ডমিনেটর্সকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে দুরন্ত ছন্দে থাকা সিলেট। ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে দলটি। পঞ্চম জয়ে বিশ্বব্যাপী ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে রেকর্ড গড়া হয়ে গেছে সিলেটের। নতুন কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি প্রথম হারের স্বাদ নেওয়ার আগে সর্বোচ্চ ৪টি ম্যাচ জেতার রেকর্ড ছিল, সেটাকে পাঁচে নিয়ে গেল সিলেট।
সিলেট বিপিএলের নতুন দল নয়, আগের বেশ কয়েকটি আসরে ভিন্ন ভিন্ন মালিকানায় এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি অংশ নিয়েছে। এবারও ফ্র্যাঞ্চাইজিটির মালিকানায় পরিবর্তন এসেছে। সেই হিসেবে নতুন মালিকানায় সিলেট স্ট্রাইকার্স নামের ফ্র্যাঞ্চাইজির এটাই প্রথম আসর। আর প্রথম আসরেই তারা শাসন করে চলেছে। এ পথে সিলেট পেছনে ফেলেছে আইপিএলের চেন্নাই সুপার কিংস, বিগ ব্যাশের হোবার্ট হারিকেনস, সিপিএলের বার্বাডোস ট্রাইডেন্টস ও এসএলপিএলের দল জাফনা স্তালিওন্সকে। এই চারটি দলই নিজেদের প্রথম আসরে প্রথম হারের স্বাদ নেওয়ার আগে ৪টি করে ম্যাচ জেতে।
রেকর্ড গড়ার ম্যাচে টস হারে সিলেট, আগে ব্যাটিং করতে নামে ঢাকা ডমিনেটর্স। সিলেটের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে সুবিধা করতে পারেনি ঢাকা। উসমান গনি, অধিনায়ক নাসির হোসেন ও আরিফুল হকের ব্যাটে ৭ উইকেটে ১২৮ রান তোলে তারা। জবাবে মোহাম্মদ হারিসের ব্যাটে দারুণ শুরুর পরও দিক হারায় সিলেট। পরে মুশফিকুর রহিম, থিসারা পেরেরা, আকবর আলীরা ৪ বল হাতে রেখে দলকে ৫ উইকেটের জয় এনে দেন।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে সিলেট। উদ্বোধনী জুটিতে ৫২ রান যোগ করেন মোহাম্মদ হারিস ও নাজমুল হোসেন শান্ত। হারিস টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেললেও শান্ত এদিন ধীর গতিতে ব্যাট চালান। বাঁহাতি এই ওপেনার ২০ বলে ১২ রান করে আউট হন। কিছুক্ষণ পর থামেন হারিসও। এর আগে ৩২ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যান।
এ সময় সিলেটের বিপদ বাড়ে জাকির হাসানের বিদায়ে, ১ রান করেই থামেন তরুণ বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৫২ রানে বিনা উইকেট থেকে ৬১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সিলেট। এখান থেকে হাল ধরে ২২ রানের জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম ও ম্যাচসেরা ইমাদ ওয়াসিম। ২০ বলে ১১ রান করা ইমাদ রান আউটে কাটা পড়ে সাজঘরে ফেরেন।
মুশফিকও আর বেশি সময় টিকতে পারেননি, থিসারা পেরেরার সঙ্গে ব্যাট চালিয়ে দলীয় সংগ্রহ ১০০ পার করে আউট হন তিনি। ২৫ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ২৭ রান করেন উইকেটরক্ষক অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। রান-বলের ব্যবধান থাকলেও তা নিমেষেই পুষিয়ে নেন থিসারা ও আকবর। থিসারা ১১ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২১ ও আকবর ৫ বলে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। ঢাকার নাসির হোসেন ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানি।
এর আগে ব্যাটিং করা ঢাকার হয়ে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসও খেলেন বল হাতে আলো ছড়ানো নাসির। ডাহহাতি এই ব্যাটসম্যান ৩১ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৯ রান করেন। এ ছাড়া উসমান গনি ২৭, দিলশান মুনাবিরা ১৭, মোহাম্মদ মিথুন ১৫ ও আরিফুল হক ২০ রান করেন। দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা পাকিস্তান স্পিনার ইমাদ ৪ ওভারে ২০ রানে ৩টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ আমির ও নাজমুল হোসেন অপু।
এমআই