নিজস্ব প্রতিনিধি:
দ্বিতীয় ধাপে চলতি মাসেই (ফেব্রুয়ারি) আন্তঃজেলা, আন্তঃসিটি করপোরেশন এবং আন্তঃবিভাগ পর্যায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহম্মদ।
সচিব বলেন, ‘অনলাইন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অনেকদিন ধরে এ মন্ত্রণালয় পাইলটিং করছে। আমরা খুবই ডায়নামিক একটি সফটওয়্যার করেছি। এ সফটওয়্যারের কিছু সমস্যা ছিল। সমস্যাগুলো চিহ্নিত ও শিক্ষকদের চাহিদাগুলো বিবেচনা করে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর একটি সমন্বিত নীতিমালা জারি করেছি। এটার আলোকে প্রথমপর্যায়ে আন্তঃউপজেলা বদলি কার্যক্রম শুরু করেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে ২৫ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি হয়েছে। বিশ্বাস করি এর মাধ্যমে ৯৮ শতাংশ শিক্ষক সন্তুষ্ট হয়েছেন।’
মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে প্রাথমিক শিক্ষার উদ্যোগ ও অর্জন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। এসময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ধাপে এ মাসেই আন্তঃজেলা, আন্তঃসিটি করপোরেশন এবং আন্তঃবিভাগ পর্যায়ে শিক্ষক বদলিতে আরও কিছু কাজ করতে হবে। সেই কাজটা করছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপজেলাভিত্তিক নিয়োগ করা হয় এবং বিভিন্ন সময় আন্তঃজেলা, আন্তঃউপজেলা এবং আন্তঃবিভাগে যৌক্তিক প্রয়োজনে বদলি করা হয়ে থাকে। কিন্তু দেখা গেছে এ বদলিকে কেন্দ্র করে মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত একটি বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হতো, নানা জায়গা থেকে বদলির জন্য সুপারিশ, অনুরোধ, আবেদন, সাক্ষাৎ, যোগাযোগ এসব ছিল নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার।’
তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিপুল সংখ্যক শিক্ষককে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে দ্রুততার সঙ্গে অনলাইনে বদলির সিদ্ধান্ত হয়। পাইলটিং করে প্রায় ৪ লাখ শিক্ষককে দ্রুততম সময়ে বদলিতে গত ২২ ডিসেম্বর অনলাইন বদলি নীতিমালা জারি করা হয়েছে। প্রথমপর্যায়ে মাত্র সাতদিনের মধ্যে অনলাইনে বদলির জন্য করা ২৫ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের কার্যক্রমের জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের প্রোফাইল প্রণয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। শিক্ষার্থীদের যদি যাবতীয় তথ্য সম্বলিত প্রোফাইল যদি প্রণয়ন করতে পারি তবে এটা বহুমুখী কাজে লাগবে।’
‘প্রকল্পটি দু-বছর আগে নেওয়া হয়েছিল। আমরা বরিশালের একটি জেলায় এর পাইলটিং করেছিলাম। সেখানে ৮০ শতাংশ তথ্য আমরা নিতে পেরেছি। কিন্তু মধ্যে আমাদের কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল। এবার আমরা কাজটি জোরেশোরে শুরু করেছি। আমাদের টার্গেট আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের সরকারি-বেসরকারি সব শিক্ষার্থীর প্রোফাইল প্রণয়নের কাজ শেষ করবো।’
ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ‘প্রথম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক প্রশিক্ষণ এখনও শুরুই হয়নি।
অন্যদিকে, শিক্ষক প্রশিক্ষণের মেয়াদ ১৮ মাস করা হয়। সেজন্য মডিউলও করা হয়। কিন্তু পরে দেখা গেছে প্রশিক্ষণের মেয়াদ কমানো হয়েছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সচিব বলেন, এ বিষয়ে আমরা জানাইনি তাই ভুল তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে। এবার প্রথম শ্রেণির নতুন পাঠ্যক্রম চালু হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বইয়ের পাণ্ডুলিপি প্রণয়নের কাজ শুরু হয়ছে। মার্চ মাসে এটা সম্পন্ন হবে।’
এবার নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের বই ছাপানোর কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘এজন্য আমরা বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা হাতি নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কাজ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) করার কথা। কিন্তু তারা একা পারছে না। তারা গত ৩১ জানুয়ারি আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে তারা একা এটা করতে পারছে না। আমরা গত ১৪ দিনে এক লাখ ৭১ হাজার শিক্ষককে অনলাইন বিস্তরণ কোর্স করানো হয়েছে। আমাদের টার্গেট মার্চের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক, কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করবো।’
সময় জার্নাল/এলআর