মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ফরম পূরণ-সেশন ফি'র নোটিশে নাভিশ্বাস শিক্ষার্থীরা

সোমবার, মার্চ ১, ২০২১
ফরম পূরণ-সেশন ফি'র নোটিশে নাভিশ্বাস শিক্ষার্থীরা

মো: মাইদুল ইসলাম, তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি : বিশ্ববিদ্যালয়ের এর ক্লাস শুরু হবে ২৪ মে। এর পরেই নেওয়া হবে বিভিন্ন সেশনের পরীক্ষা।২৪ মে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকার কথা থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ৭ কলেজে নেওয়া হচ্ছে সেশন ফী, শুধু তাই নয় এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে  ঈদের পরে হতে যাওয়া পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা!

যদিও ১৭-১৮ সেশনের পরীক্ষা হবে ঈদের পরে। কিন্তু তিতুমীর কলেজের ১৭-১৮ সেশনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সেশন ফী এবং ফরম পূরনের জন্য এখনই   নেওয়া হচ্ছে ৬-৮ হাজার টাকা।

মানবিক বিভাগগুলোতে ৭ হাজার এবং বিজ্ঞানের বিভাগ গুলোতে নেওয়া হচ্ছে ৭ হাজারের চেয়ে বেশি টাকা।

সরকারি তিতুমীর কলেজে ২৮ ফেব্রুয়ারী রাতে নোটিশ প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে বলা হয়েছে ১-৩ মার্চ( মানবিক ও ব্যবসা শাখার) বিভাগগুলোর এবং ৪-৮ মার্চ( বিজ্ঞান শাখার) বিভাগগুলোর সেশন ফী এবং ফরম পূরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

৭ কলেজের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের। তার উপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ  থাকায় গ্রামেই রয়েছে অধিকাংশ শিক্ষার্থী। অল্পসময়ে এতগুলো টাকার জোগাড় করা এবং ঢাকায় আসার খরচ। যা শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারের কাছে রীতিমতো চাপিয়ে দেওয়া।

করোনাকালীন আয় কমেছে সব স্তরের মানুষের।  মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্রদের সংসার চালানোতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনের কাছে মানবিকতা আশা করেন সকলেই।
শিক্ষার্থীরা বলেন শিক্ষকেরা আমাদের সমস্যা বুঝেন। আশা করি তারা আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি ক্যাম্পাস যেহেতু বন্ধ তাই বাস ভাড়া, বিদুৎ বিল সহ ইত্যাদি খরচগুলো মওকুফ করা হোক। আর ফরম পূরণে ৫০% কমানোর  অনুরোধ জানাচ্ছেন তারা।

কলেজের ১৭-১৮ সেশনের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান অভিযোগ করে বলেন, ‘বাবা নাই, ঘরে মা অসুস্থ তাই ছোট একটা চাকরি করে কষ্ট করে সংসার চালাতে হয়। মায়ের জন্য ওষুধ লাগে প্রতি মাসে প্রায় ২/৩ হাজার টাকা। ১০ হাজার টাকার চাকরি করে সংসার চালানোই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে করোনা ভাইরাসে সব কিছু এলোমেলো। আর হুট করেই তিন দিন আগে সেশন ফি, ভর্তির নোটিশ। এতগুলো টাকা এক সাথে কীভাবে দিবো বুঝতে পারছি না। ঘর ভাড়া থাকা খাওয়া মায়ের ওষুধ সব মিলিয়ে চলতেই কষ্ট হয়। করোনায় টাকার অভাবে সবগুলো বইও এখনো কিনতে পারিনি। করোনায় যেহেতু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ছিল তাই সেশন ফি মওকুফ করার দাবি জানাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ফলে না চরেছি বাসে, না ক্লাসের বিদ্যুৎ সুবিধা নিয়েছি। অন্তত এই ফি গুলো মওকুফ করা হোক। স্বল্প এ সময়ে এতগুলো টাকা পরিশোধ করবো না মায়ের জন্য ওষুধ কিনবো না সংসার চালাবো।’

বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মনিহ উদ্দিন বলেন,' আমরা তিতুমীর কলেজে যারা পড়ে তারা সবাই নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আমরা কেউই উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান না। এত কম সময়ে আমাদের এতগুলো টাকা জোগাড় করা অসম্ভব প্রায় এমনিতেই করোনাকালে আমাদের পরিবারে অর্থনৈতিক সমস্যা। আমাদের শিক্ষকেরা যদি এ বিষয়গুলো দেখত তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শামীম ইসলাম বলেন,' ২৮ তারিখে আমাদের নোটিশ দিয়ে 3 মার্চের( মাত্র ৩ দিন) মধ্যে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এত অল্প সময়ে সেশন ফি এবং ফরম পূরণের টাকা কিভাবে আমরা দিব। তাই যেন ফরম পূরণের সময় বাড়ানো হয় এবং আমাদের টাকার পরিমাণটা যেন কমানো হয়। এ বিষয়ে আমি কলেজ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেছি।মহামারী কালীন আমরা তাদের কাছে সাহায্য আশা করি'।

এ সম্পর্কে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, আসলে সেশন ফি কলেজের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই নির্ধারিত। আমাদের এখানে কোন হাত নেই। তবে ম্যানেজমেন্ট ফি আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে তা নিচ্ছি না। সেশন ফি, ফরম পূরণের টাকা মওকুফ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। ঢাবির নির্দেশমতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিদিষ্ট তারিখেই আদায় করতে হচ্ছে। একান্ত যার পক্ষে সম্ভব নয় কলেজের লিখিত আবেদন করলে হয়তো দুই একজনকে বিবেচনা যায়।

করোনার ফলে যেহেতু কলেজের পরিবহণ, বিদ্যুৎ, ল্যাব ইত্যাদি সুবিধা ব্যবহার করা হয়নি তার ফি পরিশোধ করা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলেজ খোলার পরই বাস আবার চলবে। এতদিন যেহেতু বাস অচল অবস্থায় ছিল তার ফলে বাসের প্রচুর যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়েছে এগুলো ঠিক করাতে হবে। তারপর বাস, ল্যাব ইত্যাদি দেখভাল করার জন্য সব সময় লোকবল ছিল তাদের বেতন ও পরিশোধ করতে হবে। এই বিষয়গুলোও শিক্ষার্থীদের ভাবতে হবে। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের অবস্থা বুঝতে কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই।


সময় জার্নাল/


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল