আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতার বেআইনি বলে রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, ইমরানকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি দেওয়ারও আদেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরা।
এদিন পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) উমর আতা বান্দিয়ালসহ সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চে ইমরান খানের গ্রেফতার চ্যালেঞ্জ করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। দিনের প্রথম শুনানিতে ‘এক ঘণ্টার মধ্যে’ পিটিআই চেয়ারম্যানকে আদালতে হাজির করার জন্য ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবলিটি ব্যুরোকে (এনএবি) নির্দেশ দেন বিচারপতিরা।
পরে দ্বিতীয় দফায় শুনানি শুরু হলে ইমরানের গ্রেফতার বেআইনি বলে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট এবং তাকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তির নির্দেশ দেন। যদিও এখনই নিজের বাড়িতে ফিরতে পারছেন না পিটিআই প্রধান। আপাতত তাকে আদালতের হেফাজতে পুলিশ লাইনসের গেস্ট হাউসে থাকতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, আগামীকাল শুক্রবার (১২ মে) সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) হাজির হতে হবে। সেখানে যে মামলায় ইমরান গ্রেফতার হয়েছিলেন, তার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানিতে আদালত যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মেনে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সিজেপি উমর আতা বান্দিয়াল।
তবে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে মোটেও খুশি নয় পাকিস্তান সরকার। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এক সংবাদ সম্মেলনে আদালতের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলে বলেছেন, পিএমএল-এন নেতাদের সঙ্গে ইমরান খানের মতো আচরণ করা হয় না। তিনি প্রশ্ন করেছেন, কেন পিএমএল-এন সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফ এবং আরও কয়েকজন নেতার সঙ্গে এমন বিচার করা হয়নি।
ইমরানের গ্রেফতার বেআইনি ঘোষণা করায় সিজেপি বান্দিয়ালের সমালোচনা করে পিএমএল-এন’র প্রধান সংগঠক মরিয়ম নওয়াজ বলেছেন, একজন ‘অপরাধী’কে মুক্তি দিতে পেরে প্রধান বিচারপতি খুব খুশি।
তবে ইমরান খানের মুক্তির আদেশে দেশটিতে সরকারপক্ষ যেমন অখুশি, ঠিক তার বিপরীত চিত্র পিটিআই শিবিরে। আদালত পিটিআই প্রধানকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজয়োল্লাসে মেতে ওঠে দলটির নেতা-কর্মী-সমর্থকরা।
পিটিআই সিনেটর আজম স্বাতি সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, আইনের সামনে সবার সঙ্গে সমান আচরণ করলেই দেশ সফল হতে পারে।
এদিন ইমরান খানের জামান পার্কের বাড়িতে আনন্দ উৎসবের পাশাপাশি মিষ্টি বিতরণ করেছেন পিটিআই কর্মীরা। তাদের মতে, এই রায়ের মাধ্যমে সত্যের বিজয় হয়েছে।
এমআই