মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
আবহাওয়া অধিদপ্তর কর্তৃক ঘোষিত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় মোখা সরাসরি সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত না হানলেও এর প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছাসে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে উপকূলবাসী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ নানা সংকটের কারণে ষাটের দশকে নির্মিত উপকূলের অধিকাংশ ভেড়িবাঁধ বর্তমানে তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে।
তাই সামান্য জলোচ্ছ্বাস বা নদ-নদীর জোয়ারের প্রভাবে এসব জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে লোনা পানি ঢোকে লোকালয়ে। ফলে স্থানীয়দের আশঙ্কা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভাঙতে পারে।
তবে প্রশাসনের দাবী উপকূলের স্থাীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী এক বছর মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। এছাড়া অধিকাংশ স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ গুলো মরামত করা হয়েছে। এরপরও জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নজরদারি রয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ গুলোর উপর। এই দুর্যোগকালিন সময়ে যাতে কোন সমস্যা হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটি মেরামত করা সম্ভব হয়। এছাড়াও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে তাদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় শ্যামনগরে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক প্রস্তুতি সভা বৃহস্পতিবার (১১ মে) বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহি আফিসার আক্তার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য এসএম জগলুল হায়দার।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, উপজেলা ভুমি সহকারী কমিশনার আসাদুজ্জামান, শ্যামনগর সদরের ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. জহুরুল হায়দর বাবু, পিআইও শাহিনুর ইসলাম প্রমুখ। এ সময় সেখানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পানিউন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, এনজিও কর্মকর্তা, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে সাতক্ষীরার ভাঙনকবলিত শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, বুড়গোয়ালিনী, পদ্মপুকুর মুন্সিগঞ্জ ও আশাশুনির প্রতাপনগর, খাজরা, আনুলিয়া ও আশাশুনি সদর ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লবণাক্ততা এবং প্রচন্ড গরমে উপকূলীয় এলাকার অনেক স্থানে বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে জোয়ারের পানির চাপ বাড়লে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। বর্তমানে বেড়িবাঁধের বিভিন্ন স্থানে সংস্কারের কাজ চললেও বেশ কিছু স্থান এখনও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের চাপ মোকাবিলায় সক্ষম না।
সময় জার্নাল/এলআর