স্পোর্টস ডেস্ক:
হঠাৎ নারী ফুটবলের সুখের ঘরে আগুন। যার রেশ ধরে দায়িত্ব ছাড়তে যাচ্ছেন প্রধান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। ৩১ মে’র পর আর নারী ফুটবল দলের দায়িত্বে থাকছেন না অন্যতম সফল এই কোচ এ খবর নিশ্চিত করেছেন তিনি।
এরই মধ্যে সহকারী কোচের মাধ্যমে নারী ফুটবলের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণকে আর কাজ না করার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন ছোটন।
দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতিনিয়ত সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। একটার পর একটা টুর্নামেন্ট। এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে আমি অনেক ক্লান্ত।
পরিবারকে সময় দিতে পারি না, ব্যক্তিগত কোনো জীবন নেই। সারাদিন কাজ। কাজের পরিধিও বৃদ্ধি পেয়েছে। জবাবদিহিতা বেড়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমি দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
দেশের নারী ফুটবলকে আজকের অস্থানে আনার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা গোলাম রব্বানী ছোটনের। তবে তিনি নিজে সেটা মানছেন না, ‘এটা ভুল কথা। ফেডারেশনের ও কোচিং স্টাফসহ সবার সার্বিক সহযোগিতা মিলেই নারী ফুটবল এ পর্যন্ত এসেছে। আমার একক কোনো কৃতিত্ব নেই।’
গোলাম রব্বানী ছোটন দিনরাত নারী ফুটবলের জন্য কাজ করলেও বাফুফে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে টেকনিক্যাল ডাইরেক্টও পল স্মলিকে। দফায় দফায় পলের বেতন বৃদ্ধি করলেও সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়না ছোটনসহ স্থানীয় কোচদের।
ছোটনের কাজে পলের হস্তক্ষেপের অভিযোগও নতুন নয়। তবে ছোটন পলের কোনো হস্তক্ষেপের কথা বলতে চাননি, ‘হস্তক্ষেপের কিছু নেই। তবে জবাবদিহিতা মিলে তো সবকিছুই আছেই।’
কাজ করবেন না সেটা কি বাফুফে সভাপতি ও নারী ফুটবলের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণকে জানিয়েছেন? জবাবে ছোটন বলেন, ‘কিরন আপাকে আমি জানাইনি। আমার সহকারী কোচ লিটুকে দিয়ে জানিয়ে দিয়েছি যে কাজ করবো না। ২-৩ দিনের মধ্যে চিঠি দিয়ে আমি জানিয়ে দেবো আমার সিদ্ধান্ত। আজই আমি বাফুফের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদককে জানিয়ে দিয়েছি।’
২০০৬ সাল থেকে বাফুফেতে চাকরি করছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। ২০০৯ সাল থেকে আছেন নারী ফুটবলের প্রধান কোচের দায়িত্বে। বিগত বছরগুলোতে তার কোচিংয়েই একের পর এক সাফল্য এসেছে নারী ফুটবলে।
সর্বশেষ গত বছর সেপ্টেম্বরে নেপাল থেকে প্রথম সাফ জিতে আসে সাবিনারা। বড় সাফল্য যখন দিলেন তারপর কেন দায়িত্ব ছাড়ছেন তিনি? ‘আমি মনে করি, দেশের নারী ফুটবল এখন যে পর্যায়ে আছে যোগ্য কেউ দায়িত্ব নিলে আরো ওপরে উঠতে পারবে দল’-বলছিলেন ছোটন।
আপনি তৃপ্তি নিয়ে দায়িত্ব ছাড়ছেন? নাকি হতাশা নিয়ে? কৌশলে এই প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন ছোটন। বললেন, ‘আমি ও আমার কোচিং স্টাফ সততার সাথে শতভাগ দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেছি। আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করেছি। কোচিং স্টাফরা কাজ করেছেন ২৪ ঘণ্টা।
আমরা ৭০ জন মেয়েকে ভালোভাবে রাখতে পেরেছি। তাদের বাবা-মায়ের অভাবটাও বুঝতে দেইনি। এসব কাজ খুবই ভালোভাবে করতে পেরেছি। তাদের আমরা সম্মানের সঙ্গে রাখতে পেরেছি। এটাই আমার তৃপ্তি।’
এর আগে জাতীয় ফুটবল দলের স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না আকস্মিক অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
সময় জার্নাল/এলআর