বর্তমানে একটা গাড়ি কেনা সকলেরই শখ থাকে। ছুটির দিনে একটু লং ড্রাইভ সকলেই ইচ্ছা। কিন্তু ভাবুনতো আপনি গাড়ি কিনলেন কিন্তু আপনার শহরেই ব্যান হয়ে গেল গাড়ি চালানো। বিশ্বে এরকম অনেক শহর রয়েছে যেখানে গাড়ি ব্যান। যাতায়াতের মাধ্যম ঘোড়া, গাধা, নৌকা, সাইকেল। দেখে নিন সেই শহরগুলি..
ভেনিস, ইতালি
উত্তর-পূর্ব ইতালিতে অবস্থিত এই শহর। এর চারিদিকে জল। ১০০টা দ্বীপ বিভিন্ন সেতু দিয়ে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। রোম্যান্টিক শহরগুলির মধ্যে অন্যতম হল ভেনিস। তবে এই শহরে গাড়ি চলে না। এখানে যাতায়াতের জন্য মূলত নৌকা বা স্থানীয় ভাষায় গন্ডোলা ব্যবহার করা হয়।
গিথরন, নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডের ভেনিস নামে পরিচিত গিথরন শহর। প্রাকৃতিক তার সৌন্দর্যের সবটুকু দিয়ে সাজিয়েছে এই শহরকে। চারিদিকে বিভিন্ন খাল ঘিরে রেখেছে এটিকে। মোটর চালিত নৌকাই এই শহরে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। তবে এখন অনেকে সাইকেল ব্যবহার করে থাকেন।
ম্যাকিনাক আইল্যান্ড, মিশিগান, আমেরিকা
১৮৯৮ সাল থেকে এই শহরে গাড়ি নিষিদ্ধ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাইকেল ও ঘোড়়ায় টানা গাড়ি যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। তবে শহরে কয়েকটি পেট্রোল বা ডিজ়েল চালিত গাড়ি আছে যেগুলি শুধুমাত্র জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহার করা হয়।
হাইড্রা, গ্রিস
এজিয়ান নদীর ধারের এই শহরের প্রত্যেকটা বাড়ি সাদা রংয়ের। চারিদিকে খোয়া দেওয়া রাস্তা। প্রকৃতিকে বাঁচাতে ও জনবিস্ফোরণ আটকাতে এই শহরে বাড়ি বানানোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সেখানকার প্রশাসন। পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচাতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে মোটরগাড়িও। যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এখানে ঘোড়া বা গাধার পিঠে করে যাওয়া। একটু দূরে যেতে এখানকার মানুষ নৌকা ব্যবহার করে থাকেন।
ফায়ার আইল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক, আমেরিকা
শুনতে অবাক লাগলেও মাত্র ৫১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এই দ্বীপের। চওড়া মাত্র ০.৮ কিলোমিটার। ফলে এই দ্বীপে পাকাপাকিভাবে বসবাস করা অসম্ভব। মূলত কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানে বা ছুটি কাটাতে এখানে আসেন পর্যটকরা। তবে এখানেও মোটরচালিত যান ব্যান। শুধুমাত্র সাইকেল ব্যবহার করা যায়। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য কয়েকটি মোটরগাড়ি রয়েছে।
প্যাকুয়োতা আইল্যান্ড, ব্রাজ়িল
রিও ডি জেনেইরো থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরে এই দ্বীপ। টামোইয়ো ইন্ডিয়ান্স প্রজাতির মানুষদের বাসস্থান এই দ্বীপ। অ্যাম্বুলেন্স ও ময়লা নেওয়ার গাড়ি ছাড়া কোনও গাড়ির অনুমতি নেই এই শহরে ঢোকার। সাইকেল ও ঘোড়ার গাড়ি এখানে চলার মাধ্যম।
ভউবান, জার্মানি
শহরটি একেবারে নতুন। ২০০৬ সালে এটি পুরোপুরি তৈরি হয়। এই শহরে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়। তাই এখানে সোলার প্যানেলের সংখ্যা বেশি। এছাড়া চাষ করা হয় এই শহরেই। তবে এখানে সরকারিভাবে গাড়ি ব্যান নয়। বাসিন্দাদের মোটরগাড়ি ব্যবহার না করতে উৎসাহিত করা হয়। অনেক বাসিন্দাই শহরের বাইরে তাঁদের গাড়ি পার্ক করেন।
ফেস এল বালি, মরক্কো
১৯৮১ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তালিকায় জায়গা করে নেয় এই শহর। মোট দেড়লাখ মানুষের বাস এখানে। শহরটি ঘিঞ্জি। ফলে সংকীর্ণ রাস্তা, গায়ে গায়ে বাড়ি আছে এই শহরে। এই ঘিঞ্জি রাস্তায় কোনও গাড়ি ঢুকতে পারে না সেই কারণেই এখানে গাড়ি নেই। তবে বিশ্বের মধ্যে ফেস এল বালি হল সবথেকে বড় গাড়িমুক্ত অঞ্চল।
হেইলবাট কোভ, আলাস্কা, আমেরিকা
প্রান্তিক গ্রাম এটি। কাচিমাক বে স্টেট পার্কের পাশে অবস্থিত এই গ্রাম। বন্যপ্রাণে ঘেরা এই গ্রামে আসতে গেলে নৌকা বা সিপ্লেনে করে আসতে হবে। এখানে ঘোরার একমাত্র রাস্তা হল পায়ে হাঁটা ও বা সব রাস্তায় চলে এরকম গাড়ির ব্যবহার।
লা কুম্বারসিটা, আর্জেন্তিনা
লাতিন আমেরিকার এই গ্রামে রয়েছে ইউরোপের ছোঁয়া। আর্জেন্তিনার কালামুচিটা গ্রামে বছরে ৩ লাখ পর্যটক আসেন। দেশের একমাত্র পথে হাঁটার শহর এই লা কুম্বারসিটা। হেঁটেই ঘুরতে হয় এই গ্রাম।
জ়ারমাট, সুইজ়ারল্যান্ড
মাটেরহর্নের পাদদেশে অবস্থিত এই গ্রাম। এখানে বৈদ্যুতিন ট্যাক্সি, বাস চলে। এছাড়া চলে ঘোড়ার গাড়ি, সাইকেল। এখানেও পেট্রোল ও ডিজ়েল চালিত গাড়িতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
ইলাপা, মেক্সিকো
সমুদ্রের ধারে অবস্থিত এই শহর মূলত মাছের গ্রাম নামে পরিচিত। বিভিন্ন ধরনে সামুদ্রিক মাছ ও সমুদ্র পর্যটকদের আকর্ষিত করে। তবে এই শহরেও গাড়িতে নিষেধাজ্ঞা রয়ছে। হেঁটেই বিচে ঘুরে থাকেন পর্যটকরা।
বাল্ড হেড আইল্যান্ড, উত্তর ক্যারোলিনা, আমেরিকা
সমুদ্র, তারপাশে গল্ফ কোর্স, কটেজ এই দ্বীপের প্রধান আকর্ষণের বিষয়। মোট ২৫০ প্রজাতির পাশি ও সামুদ্রিক কচ্ছপ, শিয়াল ও কুমির দেখা যায় এই দ্বীপে। বন্যপ্রাণ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে অক্ষত রাখতে এখানে ব্যান করা হয়েছে মোটরগাড়ি।