সাইফ ইব্রাহিম, ইবি প্রতিনিধি:
পোষ্য কোটায় শর্তহীন ভর্তির দাবিতে গত ২৬ জুলাই থেকে খন্ডকালীন কর্মবিরতি পালন করে আসছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। সর্বশেষ আজ শনিবার (৫ আগস্ট) পাঁচ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। এদিকে কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির নামে হয়রানি বন্ধ এবং পোষ্য কোটায় নির্ধারিত নাম্বারে ভর্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১১টায় প্রশাসন ভবনের সামনে এই মানববন্ধন করেন তারা। মানববন্ধনে উক্ত কোটায় শুন্য নাম্বারে নয়, যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তির জোর দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা।
দাবির পক্ষে শিক্ষার্থীরা বলেন, 'কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে একটা ন্যূনতম নাম্বার তো নির্ধারণ করাই রয়েছে। কিন্তু কর্মকর্তাদের দাবি একেবারে শর্তহীন ভাবে ভর্তি নিতে হবে। এমন যে যদি ভর্তি পরীক্ষায় শূন্যও পায়। এটাতো একটা অযৌক্তিক দাবি। এমনভাবে ভর্তি হওয়া কর্মকর্তাদের সন্তানদের অনুত্তীর্ণ ফলাফলের গ্লানি ক্লাসের ৭০ জনকে বইতে হয়। এতে ৪ মাসের সেমিস্টার ৯ মাস পর্যন্ত চলে যায়। প্রশাসনকে এবিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা চাই শুন্য নাম্বারে নয়, যোগ্যতায় হোক ভর্তি।'
এছাড়াও উল্লেখিত দাবির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ই-ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করা, ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত অনলাইন ক্লাসের জন্য ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ বৃদ্ধি, পরিবহন ভোগান্তি নিরসন ও ছুটির দিনে পর্যাপ্ত পরিবহন সেবা প্রদান এবং সার্টিফিকেট উত্তোলনে ভোগান্তি নিরসনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালামের নিকট তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। এসময় কার্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার ও পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
দাবির বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম বলেন, 'আমরা প্রত্যাশা করি বিশ্ববিদ্যালয় ভালো চলুক। কর্মকর্তাদের দাবি করার ব্যাপারে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তাদের চেয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা হচ্ছে সহায়ক আর মূল হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী। আর দাবিগুলো আমরা সমাধান করছি। আমরা বসে নেই বরং সমাধানের পর্যায়েই আছি।
প্রসঙ্গত, গুচ্ছের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষায় ন্যুনতম ৩০ নম্বর প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরাই কেবল ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে। সকল ধরনের কোটার ক্ষেত্রেও ন্যূনতম পাশ নম্বরের (৩০) শর্ত প্রযোজ্য। ফলে পোষ্য কোটা থাকা সত্ত্বেও শর্তপূরণ করতে না পারায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের সন্তানরা বিশেষ সুবিধায় ভর্তি হতে পারছেন না। এ নিয়ে গত ২৬ জুলাই থেকে আজ চতুর্থ বারের মতো পোষ্যদের শর্তহীন ভর্তির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন তারা। এছাড়া দাবি না মানা হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এমআই