নিজস্ব প্রতিনিধি:
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা পূর্বঘোষিত ১৭ আগস্টই শুরু হবে। এবার পূর্ণ নম্বরের ওপর পরীক্ষা হবে। প্রশ্নফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠু, সুন্দরভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগামী ১৪ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস, বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত তিন বছর যথাসময়ে পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় ক্রমান্বয়ে আমরা এ সময়সূচি-বিপর্যয় পর্যায়ক্রমে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছি। সেই ধারাবাহিকতায় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা-২০২৩ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রণীত ২০২৩ সালের পুনর্বিন্যাসকৃত পাঠ্যসূচি (সিলেবাস) অনুযায়ী পূর্ণনম্বর ও পূর্ণসময়ে হবে।
দীপু মনি বলেন, এ বছর দেশের ১১ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৪২ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৮৮ হাজার ৮৮৭ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৭০ হাজার ৪৫৫ জন। সারাদেশে মোট কেন্দ্র ২ হাজার ৬৫৮টি এবং মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ১৬৯টি। ২০২২ সালে সব বোর্ড মিলিয়ে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১২ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ জন। সেই হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ জন।
তিনি আরও জানান, এবার দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষায় অংশ নেবেন ১১ লাখ ৮ হাজার ৫৯৪ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৫ লাখ ২৬ হাজার ২৫১ জন এবং ছাত্রী ৫ লাখ ৮২ হাজার ৩৪৩ জন। মোট কেন্দ্র এক হাজার ৫৩৫ এবং মোট প্রতিষ্ঠান ৪ হাজার ৬৪৭টি।
এদিকে, মাদরাসা বোর্ডের অধীন আলিম পরীক্ষায় অংশ নেবেন ৯৮ হাজার ৩১ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র ৫৩ হাজার ৬৩ জন এবং ছাত্রী ৪৪ হাজার ৯৬৮ জন। মোট কেন্দ্র ৪৪৯টি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২ হাজার ৬৮৮টি।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল) ও ডিপ্লোমা-ইন-কমার্স পরীক্ষায় অংশ নেবেন এক লাখ ৫২ হাজার ৭১৭ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ছাত্র এক লাখ ৯ হাজার ৫৭৩ জন এবং ছাত্রী ৪৩ হাজার ১৪৪ জন। মোট কেন্দ্র ৬৭৪টি এবং মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক হাজার ৮৩৪টি।
ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার প্রমুখ।
এদিকে, এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল করেছেন পরীক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি থেকে মিছিল বের করেন কিছু পরীক্ষার্থী। এ সময় তাদের হাতে দেখা যায়- পরীক্ষা দুইমাস পেছানো, ৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়ার দাবি এবং সোমবার পুলিশি হামলার প্রতিবাদ সংবলিত প্ল্যাকার্ড।
আজও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগ থানার সামনে আসার পরই তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে ছয়জনকে ধরে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তবে তাদের আটক দেখানো হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।
সময় জার্নাল/এলআর