সর্বশেষ সংবাদ
প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছর:
সময় জার্নাল ডেস্ক: ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের চাপে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়াতে জোর দিচ্ছে মস্কো। আর এর দায়িত্ব কাঁধে পড়েছে মস্কোর শীর্ষ কূটনীতিক সের্গেই ল্যাভরভের। যিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন। বন্ধুর খোঁজে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে চষে বেড়ানো ল্যাভরভ এবার পা ফেলবেন ঢাকায়। ঐতিহাসিক বন্ধুত্বে যেন কোনো পরাশক্তির কারণে চিড় না ধরে, সেই বার্তা দিতেই সংক্ষিপ্ত সফরে আজ (৭ সেপ্টম্বর) সন্ধ্যা নাগাদ ঢাকায় আসবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ। স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর মস্কোর কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসছেন। ঢাকা-মস্কোর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ঝালাইসহ বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে ল্যাভরভের এ সফরের রাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বলে মনে করছেন ঢাকার কূটনীতি সংশ্লিষ্টরা। ঢাকার এক কূটনীতিক বলেন, সব থেকেও রাশিয়া এখন অনেকটাই একা। রাশিয়া ইউরোপে যেভাবে প্রভাব বিস্তার করছিল, তা ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তলানিতে ঠেকেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ রুশদের একা করে দিয়েছে। মস্কোর সঙ্গে ঢাকার যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক, তা যেন অটুট থাকে এবং সামনের দিনেও বাংলাদেশ যেন দেশটির পাশে থাকে সেই বার্তা সম্ভাব্য বৈঠকগুলোতে ল্যাভরভ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। দায়িত্বশীল এক কূটনীতিকের ভাষ্য, আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে রাশিয়া এখন অনেকটাই বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। অন্যান্য প্রভাবশালী পরাশক্তির কারণে যেন ঢাকার অবস্থান পরিবর্তন না হয়, সেটাই হয়তো মস্কোর চাওয়া থাকবে। অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশ কিন্তু পরোক্ষভাবে রাশিয়াকে সমর্থন দিয়ে গেছে। আমরা ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকছি। সেটা কিন্তু ঠিকই রাশিয়ার পক্ষে যাচ্ছে।সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় রাশিয়ার ৬৯টি জাহাজকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ল্যাভরভ তুলবেন বলে ইঙ্গিত রয়েছে। এক্ষেত্রে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য মালামাল নিয়ে আসা রুশ জাহাজকে যে পরিমাণ ঝামেলায় পড়তে হয়েছে, তা গুরত্ব দিয়ে আলোচনায় তুলবেন ল্যাভরভ। এ প্রসঙ্গে দায়িত্বশীল এক কূটনীতিক বলেন, রাশিয়ার ইকোনোমিক অপারেটরস আছে। জাহাজ রুশদের একটি ইকোনোমিক অপারেটরস। রাশিয়ার যে ৬৯টা জাহাজে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সেটা লিফট করার ব্যাপারে তারা বলতে পারে। তাদের যুক্তি হতে পারে ওটা দ্বিপক্ষীয় নিষেধাজ্ঞা, তা বাংলাদেশ কেন পালন করতে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কেন মানবে বাংলাদেশ, সেটাই হয়তো তাদের প্রশ্ন হতে পারে। কিন্তু এটার উত্তর আমাদের কাছে নেই। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ঢাকা-ওয়াশিংটনের সম্পর্কে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে তার একটি গুরত্বপূর্ণ কারণ মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখা। আর মস্কোর দিক থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জাহাজকে বাংলাদেশে ভিড়তে না দেওয়ায় বিপদ হয়েছে ঢাকার জন্য। কেননা, ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের কূটনৈতিক পত্র পেয়ে রুশ জাহাজকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এক জাহাজকে কেন্দ্র করে ঢাকা-মস্কো সম্পর্কে অনেক ঘটনাই ঘটে গেছে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন ল্যাভরভ। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে মোমেন-ল্যাভরভ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন।দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো উঠে আসবে। ঢাকা-মস্কো সম্পর্ক জোরদার, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের অগ্রগতি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও রোহিঙ্গা ইস্যু আলোচনার টেবিলে থাকবে।পাশাপাশি ইউক্রেন পরিস্থিতি, ভূ-রাজনীতি, খাদ্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া জ্বালানি সহযোগিতা এবং রাশিয়া থেকে গম ও সার আমদানির বিষয়ে ঢাকা গুরুত্ব দেবে বলে মনে করছে সূত্রগুলো। গত মঙ্গলবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের অনেক দিনের সম্পর্ক। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বিশ্বের যেসব জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষ করে ইউক্রেন সংকটের পর থেকে; সেগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা রাশিয়াকে একটা অনুরোধ করতে পারি, দ্রুত যেন একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করা যায়। ল্যাভরভের সঙ্গে আলোচনায় খাদ্য, সার ও ফুয়েলের মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানান মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, আমাদের যে সমস্যা রয়েছে তা আমরা তুলে ধরব।একই দিন মস্কোতে ল্যাভরভের ঢাকা সফর নিয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাকারোভা জানান, সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে রাশিয়ার বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক’ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। সময় জার্নাল / এস.এম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল