ইমরান মাহফুজ :
আমাদের সমস্যা আছে থাকবে। কিন্তু বেড়েছে নারী ধর্ষণ, হত্যা, মানবাধিকার লংঘন, কোটি টাকার দুর্নীতি, লেখক সাংবাদিক হয়রানি কিংবা হাজার হাজার মানুষের বেকারত্ব; রাষ্ট্রের এসব সমস্যা কী বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার্থীদের ভাবায় জাগায়?
সাধারণ মানুষের টাকায় প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানে পড়ে তাদের নিয়ে দায় অনুভব করে? আপনার আমার সমাজ ভাবনায় দেশ মাটি মানুষের স্থান কতটা প্রশ্ন রেখে গেলাম।
অথচ ক্যাম্পাসের ভিতর ছোটখাটো ঝামেলা হলে উত্তাল হয়ে যায়! গ্রুপভিত্তিক আন্দোলন, আলোচনায় মুখরিত। (ভাতের বিল দেয়া নেয়া, ভাইকে সালাম দেয়া, আম কাঠাল খাওয়া, খেলাধুলাসহ যত অহেতুক কাজ নিয়ে লিপ্ত)
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কথা বলার বিষয় দেখলে লজ্জা লাগে। বিব্রত হই তারুণ্যের একজন হিসেবে। তারা সমাধান করতে পারবে না সত্য কিন্তু রাষ্ট্রের সংকটে তারা কী মতামত/ আলোচনা করতে পারে। গবেষণা হারিয়েছে অনেক আগেই। দায় ও দায়িত্ব কী নেই। ক্যাম্পাসের বাহিরের দুনিয়া কার?
খ.
শিক্ষার্থীদের মানসিকতা, মনন কেন এমন? বই জ্ঞান ভিত্তিক সমাজের বাহিরে খুব সীমাবদ্ধ জীবন যাপন করে। যাদের সাথে চলাফেরা তারাও এমন। (সংগদোষে লোহা ভাসে) তার নিদারুণ উদাহরণ জেলা উপজেলা ভিত্তিক সমিতি, সভা সেমিনারে দেখা যায়।
তাদের আলোচনায় থাকে না একজন শিক্ষাবিদ, লেখক সাংবাদিক গবেষক, থাকে না বুদ্ধিবৃত্তি চিন্তার মানুষ কিংবা একজন বিজ্ঞানী। তারা রাখে ছাত্র নেতা (যিনি কোনো দিন ছাত্রদের অধিকার নিয়ে মাঠে ছিলো না), আমলা ব্যবসায়ী কিংবা স্থানীয় রাজনৈতিক।
এক দুই হাজার টাকা কিংবা একটা সেল্ফি বা একটা পোস্টের জন্য সোনার জীবন ক্ষয় করে। তারপর হতাশ হয়ে ঘরে ফিরে! নিজেরাও খেতে পারে না, পরিবারও চালাতে পারে না। তারা সমাজকে কী দেবে। আমরা জানি না আমাদের জীবন কতটা মূল্যবান। আমরা চাইলে পাল্টে দিতে পারি চারপাশ।
সৃষ্টি করতে পারে নিজের বলার মতো একটা গল্প!
রাষ্ট্রের বহুমাত্রিক সংকট তারুণ্য যদি না চোখ না খুলে তাহলে আগামী অন্ধকার।
আমরা কেবলমাত্র নিজের ক্যাম্পাস নিয়ে থাকবো? আর নিজের ক্যাম্পাস বলতে কিছু কি আছে এখন।
সব টেনমিনিটস্কুল থিয়োরি নিয়ে চলছে।
সব মিলিয়ে এক চোখা বিশ্ববিদ্যালয়েও আছে অহেতুক বিশৃঙ্খলা আর রাষ্ট্রের বহুমাত্রিক সংকট। এর মধ্যে আশার আলো নিভু নিভু বাতি আলোর চেয়ে কালি ছড়াচ্ছে বেশি!
বড় বড় হল, ক্যাম্পাসে দালান কিংবা রাস্তা ঘাট ব্রিজ আরও করতে পারেন কিন্তু মানুষের সামাজিক মুক্তি না হলে ভয়াবহ সময় অপেক্ষা করছে। যেভাবে উপলব্ধি হয়েছে/ ভুগিয়েছে করোনার সময় স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে! শিক্ষায় পারে আলো আনতে, ঠিকঠাক দেখিয়ে দিতে অন্ধকার।
(হাল্কা টফিক : আমরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে গর্ব করি, কিন্তু পাবলিক হসপিটালে চিকিৎসা নিতে/ নিয়ে হিনোমন্যতায় ভুগি কেন?)
লেখক : কবি ও গবেষক।
১৯ মে ২০২১