নিজস্ব প্রতিবেদক:
তিনি একাধারে একজন সফল শিক্ষক, সুষম সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্নদ্রষ্টা, গরীববান্ধব সুষম সমাজ বিনির্মাণে আজীবন কাজ করার প্রত্যয় যার, মৌলিক চিন্তাবিদ, মননশীল লেখক, আজীবন যার অদম্য আগ্রহ গরিবের জীবন ও অর্থনীতি নিয়ে, সবসময় কাজ করছেন অসহায় মানুষের পক্ষে। অর্থনীতিবিদ ও এনবিইআর'র চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিথযশা অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ। দীর্ঘদিন ধরে সংকটকালে জাতিকে দিশা দিয়ে যাচ্ছেন যিনি। স্পষ্টবাদী হিসেবে পছন্দের ব্যক্তিতে পরিণত হওয়া অধ্যাপক পারভেজের লেখাও সমাদৃত হয়েছে। দেশের রাজনীতি, দারিদ্র্যের অর্থনীতি ও সাধারন জনগনের পক্ষে তার ক্ষুরধার লেখা ও বলা মানুষের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। তার লেখায় সমস্যা যেমন আলোচনা করা হয়েছে, তার সাথে ঐসব সমস্যা সমাধানের সুন্দর দিক-নির্দেশনা ও পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
এই দারিদ্র্যের অর্থনীতি নিয়ে সবসময় সোচ্ছার অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজের বায়োগ্রাফি 'এক পলকে একটু দেখা অধ্যাপক পারভেজের জীবন ও দর্শন'।
বইটিতে যা আছে,
সমাজ যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। তখন কেউ কেউ এগিয়ে আসেন আলোকবর্তিকা নিয়ে, অন্ধকার তাড়িয়ে দিয়ে চারিদিকটা আলোকিত করতে। সমাজ ও জাতি যখন পথ হারায়, তখন পথ নির্দেশে কেউ কেউ ধ্রুবতারা হয়ে পথ দেখান।
অবক্ষয়ের ঘৃণ যখন সবকিছু গ্রাস করতে থাকে। তখনও কেউ কেউ এমন আছেন, যারা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। অন্যায়-অনাচারে যখন চারিদিকে ভরে ওঠে, তখনও কেউ কেউ বজ্রকণ্ঠ হয়ে প্রতিবাদের তীব্র নিনাদে ঘুম ভাঙিয়ে দেন ঘুমন্ত মানুষের, সমাজের। দেশ ও জাতির ক্রান্তিকালে, ঘুমন্ত জাতিকে জাগানোর নিমিত্তে অধ্যাপক পারভেজের সংগ্রামের কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে এই পুস্তকে।
ধনীর দুলাল অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ নামক সাদা মনের মানুষটি কীভাবে ক্রমেই হয়ে ওঠেন অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে, বৈষম্য ও বঞ্চণার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রতীক, তা পাঠকদের সামনে তুলে ধরার বিনীত প্রয়াস এই পুস্তক ।
বৈষয়িক উন্নতির কথা চিন্তা করলে প্রফেসর পারভেজ এক্ষেত্রে একজন ব্যর্থ মানুষ, তা বলাই বাহুল্য। তাঁর বণিক পিতা অঢেল সম্পদ রেখে গেছেন, আর তিনি তা নীরবে বিলিয়ে গেছেন। তাঁর পড়াশোনা লব্দ জ্ঞান দ্বারা তিনি তাঁর পরিবারের শিল্প-বাণিজ্য আরও প্রসারিত করতে পারতেন। কিন্তু তিনি যে অর্থভাণ্ডারের মোহাচ্ছন্ন নন, তা তাঁর কর্মই বলে দেয়, আর তার জীবনের এই লুকায়িত দিক পাঠক এই বইয়ের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
তবে আমরা শুধু বলতে পারি, সবাই যখন গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে নষ্ট স্রোতের টানে ভেসে চলেছেন, সেখানে প্রফেসর পারভেজ পতনশীলতার বিপরীত স্রোতে দাঁড়িয়ে এবং এগিয়ে চলে প্ৰমাণ করেছেন যে, তিনি ব্যতিক্রম। এই বইয়ে ১৬ কোটি মানুষের দেশে যে কয়জন ব্যতিক্রম ভাবনার মানুষ আছেন, তাদের একজন সম্বন্ধে জানতে পারবেন । আশা করা যায় পাঠকদের ভালো লাগবে ।
উল্লেখ্য, দেশের মানুষের কাছে তিনি পরিচিত জাতীয় অধ্যাপক গরীববান্ধব অর্থনীতিবিদ হিসেবে। ১৯৫৯ সালের ১৪ জুন চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ। তার পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামে। তাঁর পিতা ছিলেন একজন শিল্পপতি এবং মাতা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন পরিচালক ডাক্তার হুসনে আরা। সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মালেও অন্নহীন,বস্ত্রহীন,গৃহহীন মানুষদের পাশেই তিনি নিজের ঠিকানা করে নিয়েছেন। স্বাধীনতার আগে শোষণ ছিল এককেন্দ্রিক কিন্তু স্বাধীনতার পর বর্তমানে চতুর্মুখী শোষণে নিম্ন আয়ের ও দরিদ্র মানুষরা দিশাহারা! এই মহা-ক্রান্তিকালে তাদের পাশে যেন একমাত্র ওয়ান-ম্যান আর্মি হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন অধ্যাপক পারভেজ। অধ্যাপক পারভেজ সেন্ট প্লাসিডস্ হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন চট্টগ্রাম কলেজ থেকে। এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএস এ ১৯৮৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত গবেষনা করেন। ৩৫ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি দেশ-বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পাঠদান করেছেন।
১৯৮৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের মাধ্যমে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নীতি বিশ্লেষক এবং দেশের একজন নেতৃস্থানীয় গবেষক অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলাম পারভেজ বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮৮ সাল থেকে আন্ডারগ্র্যাড অ্যান্ড পোস্টগ্র্যাড পর্যায়ে ব্যবসায় ও যোগাযোগ শিক্ষা দিয়ে আসছেন।
অধ্যাপক পারভেজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার পাশাপাশি চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজির বিজনেস ফ্যাকাল্টির সাবেক ভাইস-ডিন, চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির আইবিবিটির ভাইস রেক্টর, রুপালী ব্যাংকের পরিচালক, দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের পরিচালক ছিলেন।
এছাড়াও তিনি বিজনেস স্টাডিজ সেন্টার ফর এআইএম এক্সপ্লোরার এর সম্পাদক, ভারতের মহামায়া কারিগরি ইউনিভার্সিটির ইউপি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডিরেক্টর, সেন্টার ফর গুড গভর্নেন্স, চট্টগ্রাম এবং ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনোমিকস রিসার্চ (এনবিইআর) এর চেয়ারম্যান।
অধ্যাপক পারভেজের একাডেমিক ও পেশাগত স্বার্থগুলিতে রাজনীতি, অর্থনীতি, যোগাযোগ এবং প্রশাসন অন্তর্ভুক্ত। দেশে এবং বিদেশে বিভিন্ন বিখ্যাত জার্নাল এবং সংবাদপত্রে তাঁর অনেক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
বয়সকে তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে তিনি এখনো জ্ঞানের মশাল জ্বালিয়ে যাচ্ছেন, কাজ করে যাচ্ছেন গরীব মানুষের জন্য। দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিচ্ছেন জ্ঞানের আলো। সবসময় পাশে থাকছেন অসহায় মানুষের, কাজ করে যাচ্ছেন সুষম সমাজ বিনির্মাণে।
এমআই