রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

সাংবাদিকের ওপর নির্যাতনে জড়িত বহিস্কৃত ছাত্রলীগ কর্মীদের মানবিক ক্ষমা চবি কর্তৃপক্ষের

শুক্রবার, অক্টোবর ২০, ২০২৩
সাংবাদিকের ওপর নির্যাতনে জড়িত বহিস্কৃত ছাত্রলীগ কর্মীদের মানবিক ক্ষমা চবি কর্তৃপক্ষের

মো. জাহিদুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:

সাংবাদিক মারধরে জড়িত দুই ছাত্রলীগ কর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় অপরাধীদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।

জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও অত্যন্ত গোপন রাখা হয় বিষয়টি।

যার ফলে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের ১৫ দিন পর বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) বিষয়টি সামনে আসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর জানান, বহিস্কৃত দুই ছাত্রলীগ কর্মীর বাবা-মা এসে কান্নাকাটি করে মুচলেকা দিয়েছে। বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে তারা পরীক্ষায় বসতে পারতো না এবং তাদের ছাত্রত্ব চলে যেতো। তাই মানবিক বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের ১৯ জুন রাতে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটির জেরে চবি সাংবাদিক সমিতির সদস্য দোস্ত মোহাম্মদকে মারধর করে ছাত্রলীগের ১০-১২ জন নেতাকর্মী। মারধরের এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীর গায়ে গরম চা ঢেলে দেন তৎকালীন আইন সম্পাদক খালেদ মাসুদ। পরে চায়ের কাপ দিয়ে আঘাত করে ওই সাংবাদিকের মাথা ফাটান ছাত্রলীগ কর্মী খালেদ। এসময় দোস্ত মোহাম্মদ মাটিতে পড়ে গেলে পেটে উপর্যুপরি লাথি মারা হয়। এরপর চবি ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হান প্যান্টের বেল্ট খুলে সাংবাদিককে মারধর করেন।  

এ ঘটনায় চবি সাংবাদিক সমিতির প্রতিবাদের মুখে ৩ দিন পর গত ২২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির ভার্চুয়াল সভায় প্রধান দুই অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মীকে ৬ মাস বহিষ্কার করে। 

বহিষ্কারাদেশে বলা হয় বহিষ্কৃতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা বা অন্য কোনো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলেও অবস্থান করতে পারবেন না। যদিও এসব আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ঠিকই হলে অবস্থান করেছিলেন অভিযুক্তরা।  

বহিষ্কৃতরা হলেন- চবি ছাত্রলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হান। তারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিএফসির কর্মী এবং ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সাদাফ খানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ও ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য সচিব ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ইতোমধ্যে তাদের বহিষ্কারের ৪ মাস শেষ হয়েছে। পরবর্তীতে আবেদন ও অভিভাবকদের মুচলেকার প্রেক্ষিতে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ বলেন, আমার ওপর অকারণে হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠু বিচার করেনি। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য অপরাধীদেরকে ৬ মাস বহিষ্কার করেছিল। এখন এই সামান্য শাস্তিও নানান নাটক সাজিয়ে প্রত্যাহার করা হয়েছে। যা আমার সঙ্গে  প্রতারণা ও অমানবিকতার শামিল। এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীদের উৎসাহিত ও পুরস্কৃত করলো।

চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, চবি প্রশাসনের নির্লিপ্ততা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে অপরাধীদের কাছে জিম্মি চবি প্রশাসন। বারবার অপরাধীদের ক্ষমা করে সেটিই প্রমাণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বর্তমান প্রশাসনের কাছে সুবিচার প্রত্যাশা করাই যেন অপরাধ৷ আমরা প্রশাসনের এমন লজ্জাজনক সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।  

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল