মো. মোস্তাফিজুর রহমান রিপন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
‘দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন: তামাক কোম্পানি বেপরোয়া’ নিয়ে নলছিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে মিতু সেতু এডুকেশন আ্যান্ড চ্যারিট্যাবল সোসাইটি । সোমবার (০৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নলছিটি প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে তামাকমুক্ত করতে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যমাত্র নিকোটিন-নির্ভর বিকল্প পণ্যসমূহ ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাজারজাতকরণের সুপারিশ করেছেন দেশি ও আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও নীতিপ্রণেতারা। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও ধূমপানের ক্ষতি হ্রাসের জন্য প্রচলিত সিগারেটের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পরামর্শ দেন ।
নলছিটি মডেল সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান মৃধার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মানব সেবার নির্বাহী পরিচালক মো. রেজাউল গাজী, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম পলাশ, এম এ হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রভাষক মো. আমির হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মিতু সেতু এডুকেশন আ্যান্ড চ্যারিট্যাবল সোসাইটির পরিচালক মো. নুরুজ্জামান আকন বলেন, দেশের পাঁচটি সিটি কর্পোরেশন, ১৬টি জেলা ও ৩২ টি পৌরসভা এলাকার ২২ হাজার ৭২৩টি বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা কার্যক্রমের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এই বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রায় ২৭ হাজার লঙ্ঘন চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি নলছিটি শহরের ২০টি স্থানে তামাক কোম্পনিগুলো প্রচারণা চালাচ্ছে যেমন-মোল্লারহাট বাজার, উকিল বাজার, রাজাবাড়িয়া আবাসন, হদুয়া বাজার, বৈশাখিয়া চৌমাথা, বেপারি বাজার, তেতুলবাড়িয়া বাজার ও ফেরিঘাট, সিকদার হাট, পোলেরহাট, ভবানীপুর বাজার, নাচনমহল বাজার, তালতলা বাজার, শেরেবাংলা বাজার, নলবুনিয়া বাজার, পাওতা বাজার, আখড়পাড়া বাজার, তৌকাঠী বাজার, মানপাশা বাজার, নলছিটি বাজার ও দপদপিয়া ফেরিঘাট। এই কাজে তারা তরুণদের ব্যবহার করে কিশোর ও তরুণদের ধূমপানে উদ্বুদ্ধ করতে বিনামূল্যে সিগারেট বিতরণ করছেন। তাছাড়া তারা ক্রেতা-বিক্রেতাদের বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দিচ্ছেন। তামাক কোম্পানিগুলো আইন লঙ্ঘন করছেন। তারা কোনোভাবেই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাদেকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আটটি সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশগুলো হলো-
•দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী চূড়ান্ত করা,
•তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে নীতি সুরক্ষায় এফসিটিসি এর অনুচ্ছেদ ৫.৩ অনুসারে ‘কোড অব কন্ডাক্ট’ গ্রহণ,
•জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি দ্রুত চূড়ান্ত এবং দেশব্যাপী যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করা,
•টাস্কফোর্স কমিটিসমূহ সক্রিয় করা, কমিটির ত্রৈমাসিক সভা নিয়মিতকরণ, সভার সিদ্ধান্তসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা,
•আইন লঙ্ঘনের দায়ে তামাক কোম্পানি ও এর প্রতিনিধিকে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি জেল প্রদান,
•আইন লঙ্ঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা,
•তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন মনিটরিং কার্যক্রমের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সম্পৃক্ত করা এবং
•প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
সময় জার্নাল/এলআর