তানিউল করিম জীম, বাকৃবি প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) সাইকেল চুরি করতে এসে ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের সহায়তায় হাতেনাতে ধরা পরেছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের (কেবি কলেজ) দুই জন শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের সহায়তায় পরে উপাচার্যের ভবনের সামনে থেকে ওই দুজন সাইকেল চোরকে আটক করে নিরাপত্তা শাখায় নেওয়া হয়। তাফসির ইমন এবং শাহরিয়ার আকন্দ সাদ নামের ওই দুজন শিক্ষার্থী বর্তমানে কেবি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ভেটেরিনারি অনুষদের সামনে ইমন ও সাদ সাইকেলের তালা কেটে সাইকেল চুরির চেষ্টা করে। কিন্তু আশেপাশে লোক দেখে তালা কেটে রেখেই পালিয়ে যান তারা। পরে ভেটেরিনারি অনুষদের কয়েকজন শিক্ষার্থী নিরাপত্তা শাখায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোরদের চেহারা শনাক্ত করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা চোর ধরার জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে।
পরে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ওই দুজনকে খুঁজে পায় এবং তাদেরকে হাতে নাতে ধরে ফেলে। এসময় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে মারধরের পর্যায়ে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা ইমন এবং সাদকে আটক করে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে যায়। এসময় তাদের ব্যাগ থেকে তালা কাটার বিভিন্ন যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়। এছাড়া তাদের মুঠোফোনে চুরি হওয়া সাইকেলের ছবি, ভিডিও ও লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।
নিরাপত্তা শাখার তথ্য মতে, আটককৃত দুইজনের থেকে নগদ ২১ হাজার ৬শত টাকা, দুইটি কাটা তালা, তালা কাটার যন্ত্র, দুইটি মোবাইল ও বেশ কিছু পুরাতন চাবি পাওয়া যায়। নিরাপত্তা কর্মীরা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে আটকৃত দুইজনের নাম তাফসির ইমন, পিতার মো. শাহজাহান (বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী) এবং শাহরিয়ার আকন্দ সাদ, পিতা এম এ বারী আকন্দ। তারা উভয়েই ময়মনসিংহ সদরের কেওয়াটখালী মন্ডলপাড়ার বাসিন্দা।
এবিষয়ে বাকৃবি নিরাপত্তা কাউন্সিলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা তাদেরকে কোতয়ালী থানার কাছে হস্তান্তর করেছি। এবিষয়ে অধিকতর তদন্তের জন্য ময়মনসিংহ জেলা ডিবি পুলিশ এবং কোতয়ালী থানা তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এবিষয়ে কথা বললে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জানান, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-বিষয়ক উপদেষ্টার কাছ থেকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। এমন ছাত্র যারা কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করে, তাদের কলেজে রাখার প্রশ্নই আসে না। আমরা শিক্ষকরা জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা করেছি। এরপর তাদের অভিভাবকদের সাথেও আলোচনা করা হবে। পরে কলেজের নিয়মানুযায়ী উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, আটকৃতদের কাছে থেকে তথ্য নিয়ে চুরি যাওয়া সাইকেল উদ্ধার করা আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। যেসকল শিক্ষার্থীর সাইকেল উদ্ধার করা সম্ভব হবে না তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আংশিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সময় জার্নাল/এলআর