নিজস্ব প্রতিবেদক:
সৈয়দ আবুল মকসুদকে পড়ে বলা যায়, তার যৌক্তিক বিশ্লেষণ ও ইতিহাস বোধ কম লেখকেরই থাকে। বাঙালি মুসলমানের বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রম ও বিশ্বাসহীনতা’ বইটির অন্যতম একটি দিক হচ্ছে- পঞ্চাশের দশকের শেষ দিকে, সামরিক শাসন জারির আগে ঢাকা তথা বাংলা ও বাংলাভাষা নিয়ে সেসব সমস্যা, সম্ভাবনা ও অসামান্য অবদান রাখা ব্যক্তিদেরও বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রম নিয়ে ধারাবাহিক বিশ্লেষণ চমৎকারভাবে উঠে এসেছে। তার আলোচনা ও চিন্তাধারায় আমাদের সমাজকে পথ দেখানোর যে চেষ্টা করেছেন তা প্রশংসনীয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার হলে শুক্রবার এক আয়োজনে বক্তারা সৈয়দ আবুল মকসুদের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন। তারা আরও বলেন, পাকিস্তান আমলেও আজকের মত সরকারের নজরে আসার জন্য নানান কাজ করেছেন কবি লেখকরা। আবুল মকসুদ যাকে বলছেন বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রম ও বিশ্বাসহীনতা। আজকেও দিনেও তা প্রাসঙ্গিক। যেমন এখনো অনেকে দলের সঙ্গে পদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চেহারা বদল করে নেন। মুছে দেন ফেসবুকের পোস্ট।'
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরসি মজুমদার হলে 'বাঙালি মুসলমানের বুদ্ধিবৃত্তিক বিভ্রম ও বিশ্বাসহীনতা' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। আলোচক হিসেবে ছিলেন গবেষক ইসরাইল খান, লেখক আহমদ মাযহার, প্রাবন্ধিক কুদরত-ই-হুদা। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক আহমেদ মাওলা, অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন, গবেষক কাজল রশীদ শাহীন ও অনুবাদক আদনান আরিফ সালিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইমরান মাহফুজ। উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আবুল মকসুদের ছেলে সৈয়দ নাসিফ মকসুদ।
অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক সৈয়দ আবুল মকসদের গবেষণা থেকে বলেন, বাঙালি মুসলমান ভাগ্য-বিড়ম্বিত তার নিজের স্বভাব-দোষে, ভাগ্যচক্রে এবং অন্যের কারণেও। বার বার হয়েছে সে ভাগ্য-বিড়ম্বনার শিকার। অন্যদিকে, পাকিস্তানের চব্বিশ বছর ছিল বাঙালি মুসলমানের জীবনে একটি ক্রান্তিকাল। এ সময়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ যদি সঠিক ও বাস্তবসম্মত না হয়, তা হলে পরবর্তী সময়টি অর্থবহ হয় না। কিন্তু সে ভুলের খেসারত জাতীকে এখন যে দিতে হচ্ছে তাই নয়, ভবিষ্যতে আরও মারাত্মকভাবে দিতে হবে।
এমআই