নিজস্ব প্রতিনিধি:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল তাহিরের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে দাফনের ৫১ দিন পর রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর শালবন মিস্ত্রীপাড়া কবরস্থান থেকে তার মরদেহ তোলা হয়।
মরদেহ উত্তোলনের সময় রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাশেমসহ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী ও মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মরদেহ উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রত্যয় হাশেম বলেন, আদালতের নির্দেশে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নিহত তাহিরের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত আব্দুল্লাহ আল তাহির রংপুর মহানগরীর জুম্মাপাড়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি ঢাকার বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকসের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন। গত ১৯ জুলাই বিকেলে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুর সিটি বাজারের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন আব্দুল্লাহ আল তাহির।
এদিকে গুলিবিদ্ধ হয়ে তাহিরের মৃত্যুর ঘটনায় তার মা-বাবা পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতে মামলা করেন তাহিরের মা শিরিন বেগম।
তাহির হত্যা মামলার আসামিরা হলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য টিপু মুনশি, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, মহানগর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ডা. দেলোয়ার হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম, জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল, যুগ্ম আহ্বায়ক মাজেদ আলী বাবুল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাফিয়ার রহমান সফি, সাবেক এমপি ডিউক চৌধুরী, নাছিমা জামান ববি, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর রফিকুল আলম, জাহাঙ্গীর আলম তোতা, কানা হারুন, সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর ইদ্রিস আলী, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন, জেলা যুবলীগের সভাপতি লক্ষ্মীণ চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনিসহ অন্যরা।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানা আমলি আদালতে তাহিরের বাবা আব্দুর রহমান বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ ৪০ জনের নামে এবং অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন।
সময় জার্নাল/এলআর