নিজস্ব প্রতিবেদক:
গতকাল রাজধানীর ৫০টি স্থানে পণ্য বিক্রি করে টিসিবি। মূলত বাজার খরচ থেকে কিছু টাকা বাঁচাতেই দীর্ঘ সময় সারিতে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে টিসিবির পণ্য ক্রয় করেন সীমিত আয়ের মানুষেরা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, মতিঝিলের নটর ডেম কলেজ ও বক চত্বর।এই চার স্থানে গতকাল সরেজমিনে দেখা গেছে, টিসিবির ট্রাকের পেছনে দীর্ঘ সময় সারিতে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরে গেছেন অনেকে। কারণ, পণ্যের তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা বেশি। গতকাল রাজধানীর ৫০টি স্থানে এভাবে পণ্য বিক্রি করে টিসিবি। প্রতিটি ট্রাকে ৩৫০ জনের জন্য পণ্য ছিল। তবে অধিকাংশ জায়গাতেই এর চেয়ে ১০০ থেকে ১৫০ জন বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
টিসিবির ট্রাক থেকে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল, দুই কেজি মসুর ডাল, পাঁচ কেজি চাল ও তিন কেজি আলু কিনতে পারছেন। বাজারে সম্প্রতি আলুর দাম বেড়েছে। এ জন্য গতকাল থেকেই আলু বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি। এসব পণ্যের মধ্যে প্রতি লিটার ভোজ্যতেল ১০০ টাকা, প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০, চাল ৩০ টাকা ও আলু ৪০ টাকায় কেনা যায়। এই চার পণ্য কিনতে একজন গ্রাহককে দিতে হয় ৫৯০ টাকা। আর খুচরা বাজার থেকে এসব পণ্য কিনতে লাগে প্রায় ১ হাজার ৫০ টাকা, অর্থাৎ টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনলে অন্তত ৪৫০ টাকা সাশ্রয় হয়।
দেশে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। অক্টোবর মাসেও মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশে। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ আছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক মনে করেন, ঢাকাসহ শহর এলাকাগুলোতে টিসিবির ট্রাক সেলসহ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি বলেন, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। এমন পরিস্থিতিতে টিসিবির ট্রাক সেল কার্যক্রম শুরু এবং পণ্য তালিকায় আলু যুক্ত করার বিষয়টি ইতিবাচক। যেহেতু চাহিদার তুলনায় পণ্যের ঘাটতি রয়েছে, সে ক্ষেত্রে এ উদ্যোগের সম্প্রসারণ প্রয়োজন। টিসিবির ট্রাকে করে বিতরণ এলাকা বৃদ্ধি এবং আরও বেশিসংখ্যক মানুষের জন্য পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে একটি স্থানে দুটি করে ট্রাক রাখা যেতে পারে।
বাণিজ্যসচিব মো: সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় দেখে বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ট্রাকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং একটি ট্রাকে করে ৩৫০ জনের বেশি ভোক্তাকে পণ্য দেওয়া-এই দুটো বিষয়ই আমরা পর্যালোচনা করছি। আশা করছি, এ বিষয়ে শিগগিরই একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তানহা আজমী