রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

তথ্যযুদ্ধে পিছিয়ে কেন আমরা?

শুক্রবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৪
তথ্যযুদ্ধে পিছিয়ে কেন আমরা?

ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম:

আজকের বিশ্বে যুদ্ধের চরিত্র বদলে গেছে। এক সময় ঢাল, তলোয়ার, কিংবা পরমাণু অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধের নিয়তি নির্ধারিত হতো। কিন্তু আধুনিক যুগে যুদ্ধের মূল অস্ত্র হয়ে উঠেছে তথ্য এবং ন্যারেটিভ তৈরির ক্ষমতা। যারা তথ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং ন্যারেটিভ তৈরি করতে পারে, তারাই আসল বিজয়ী।  

আমাদের প্রিয় আমেরিকা এবং ভারত এই ক্ষমতাকে গত দুই দশক ধরে নিখুঁতভাবে ব্যবহার করছে। হলিউড এবং বলিউডের মাধ্যমে তারা তাদের সংস্কৃতি, ন্যারেটিভ এবং প্রভাব বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এর সাথে যোগ হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর একচেটিয়া ব্যবহার। অন্যদিকে, আমরা—বাংলাদেশি এবং মুসলিম সম্প্রদায়—এই দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে আছি।  

আমাদের দুর্বলতার কারণ কী?
আমাদের সংবাদমাধ্যম এবং ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে আমরা নিজেরাই ধ্বংস করে ফেলেছি। "অমুক অবমাননা" বা "তমুক অপসংস্কৃতি"র দায়ে এগুলোর ওপর লাগাতার আঘাত হেনেছি। ইংরেজি শিখতে অনাগ্রহ, আধুনিক প্রযুক্তির প্রতি অবহেলা, এবং বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, কিংবা সাংবাদিক তৈরিতে উদাসীনতার ফলেই আমরা আজ পিছিয়ে পড়েছি।  

আমাদের মধ্য থেকে কেন "পালকি শর্মা" বা "ধ্রুভ রাঠি" তৈরি হয় না? আমাদের মিডিয়া কেন বিদেশি রাষ্ট্রের এজেন্টদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়? আমাদের নিজেদের সাংবাদিক কেন রয়টার্স বা বিবিসির মতো প্ল্যাটফর্মে প্রভাবশালী অবস্থানে নেই?  

এই দুরবস্থার অন্যতম কারণ আমাদের জাতিগত দায়িত্ববোধের অভাব এবং বাস্তবতাকে অস্বীকার করার প্রবণতা। আমরা অলৌকিক সমাধানের অপেক্ষায় বসে থাকি, ইহকালকে অগ্রাহ্য করি, এবং ভাববাদী ধারণায় আটকে থাকি।  

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ও মিডিয়ার গুরুত্ব
বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি এবং সংবাদমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা হতাশাজনক। অথচ, এগুলোই হতে পারে আমাদের সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং ন্যারেটিভ প্রচারের প্রধান মাধ্যম। আন্তর্জাতিক মানের ফিল্ম, নাটক, এবং সংবাদ উপস্থাপনার মাধ্যমে আমরা আমাদের গল্প বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারি।  

আমাদের ইতিহাস দেখায়, সৃজনশীলতা এবং তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার কীভাবে সমাজ এবং জাতির ভবিষ্যৎ বদলে দিতে পারে। বর্তমান সময়ে এআই, ডেটা এনালিটিক্স, এবং কনটেন্ট ক্রিয়েশনের মতো ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  

প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে  
পরকালের কথা মাথায় রেখে ইহকালকে অবহেলা করার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। আধুনিক যুদ্ধের জন্য প্রয়োজন তথ্য এবং ন্যারেটিভ তৈরিতে দক্ষতার। আমাদের প্রয়োজন সৃজনশীল এবং মেধাবী তরুণদের সাংবাদিকতা, ফিল্ম মেকিং, থিয়েটার, এবং প্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।  

পরিবর্তনের ডাক
আমাদের মেধাবী তরুণদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি এবং মিডিয়ায় বিনিয়োগ করা এখন সময়ের দাবি। আমরা যদি এই ক্ষেত্রে নিজেদের শক্তিশালী করতে পারি, তাহলে বিশ্বদৃশ্যপট বদলানো সম্ভব। তাই আসুন, ইহকাল ও পরকাল উভয়কেই গুরুত্ব দিয়ে নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করি এবং আধুনিক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হই।  

লেখক: ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম,  
কলামিস্ট, সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল