সময় জার্নাল ডেস্ক:
বাতাসে বহিছে প্রেম/নয়নে লাগিলো নেশা/কারা যে ডাকিলো পিছে/বসন্ত এসে গেছে...। প্রকৃতির সুরে তাল মেলাতে পারলেও এই গানের সুরের সঙ্গে যেনো তাল মিলিয়ে এলো বসন্ত। কবির ভাষায় বললে, ‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত’। বাংলা ঋতু রাজ বসন্ত। শীতের শুষ্কতা ও রুক্ষতাকে পাশ কাটিয়ে শুরু হয়েছে বসন্তের আগমনী গান।
বাংলাদেশের ঋতুচক্রে ফাল্গুন-চৈত্র দুই মাস বসন্তকাল। এটি বছরের শেষ ঋতু। দখিনা ঝির ঝিরে বাতাস, নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া নিয়ে আসে বসন্ত। তাই বসন্ত নিয়ে বাঙালিদের মাঝে নতুন সুরার ধারা সৃষ্টি করে।
বসন্ত ভালোবাসায় উদযাপনটা হোক ভিন্নভাবে
শীতের আমেজ গায়ে মেখে এসেছে বসন্ত। দিনটা ভালোবাসারও। আজ যেমন পহেলা ফাল্গুন। তেমনি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও। একই সঙ্গে দুইটি দিবস উদযাপনের উৎসবে মেতেছে বাঙালি। যদিও অনেকেই মনে করেন ভালোবাসা প্রকাশের জন্য আলাদা দিবসের প্রয়োজন নেই। ভালোবাসা অফুরান। ভালোবাসা অনন্তকালের। তবুও বিশ্বায়নের প্রভাবে পশ্চিমা সংস্কৃতি ঢুকে পড়েছে বাঙালি পাড়ায়।
তরুণ-তরুণীরা বসন্ত-ভালোবাসায় সিক্ত
পরনে বাসন্তী রঙের শাড়ি। মাথায় হলুদ ফুলের মালা। হাতে টকটকে লাল রঙের তাজা গোলাপ। তরুণ সঙ্গীর হাত জড়িয়ে তরুণী এগিয়ে চলেছে শহরের রাস্তায়। বসন্ত উৎসবে শামিল হতে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সকাল থেকেই শাহবাগের দিকে ছুটছেন তরুণ-তরুণীরা। কেননা, এখানে উৎসব আয়োজনটা হয় ভিন্নভাবে।
প্রকৃতি বসন্ত না এলেও ঋতুরাজ ঠিকই এসেছে মানুষের মনে। তাই তো নগরে বাস করা অনেক রমনীর মাথায় শোভা পাচ্ছে রঙিন ফুলের মালা। তাদের কারো কারো পরনে বাসন্তি শাড়ি।
পঞ্জিকার পাতায় বসন্ত এলেও প্রকৃতিতে নেই সুরের ধারা
পঞ্জিকার নিয়ম মেনে আজ পহেলা ফাল্গুন। পাতা ঝরা দিনের শেষে এসেছে বসন্ত! যদিও প্রকৃতিতে এখনো বসন্তের ঐক্যতান নেই। শীতের হিমেল পরশ কাটেনি এখনো। বইছে উত্তরের হাওয়া। সেই হাওয়াকে সঙ্গী করে ফাগুন উৎসবের আমেজ। অন্যদিকে বিশ্ব ভালোবাসার দিবসের বাতাস লেগেছে এদেশেও। দুইটি উৎসব একত্রে ভিন্ন আবহ যোগ করেছে আজ।
মানুষ ভুলোমনা হতে পারে, কিন্তু প্রকৃতি নয়। সে তার আপন খেয়ালে বইছে। তাইতো প্রকৃতি ক্যালেন্ডার মেনে চলে না। এবার বুঝি প্রকৃতিতে বসন্তের গান বাজতে খানিকটা দেরি হবে। শীতকে বিদায় করে তবেই না আসবে বসন্ত।
বসন্ত-ভালোবাসায় বেড়েছে ফুলের কদর
বসন্ত উৎসব ও ভালোবাসা অনেকটাই মানবিক। অনুভূতির। কিন্তু এর অর্থনৈতিক দিকও রয়েছে। যার প্রতিফলন ঘটেছে শাহবাগের ফুল বাজারে। সেখানে ভালোবাসা ও বসন্তের ফুলের বিকিকিনি ভালো। দোকানিরা ফুল বিক্রি করে ফুসরত পাচ্ছেন না।
এখানে বিক্রি হচ্ছে রঙ-বেরঙের গোলাপ, রজনীগন্ধা, হাসনাহেনা, গাঁদা, জারবেরাসহ নাম জানা-অজানা অনেক ফুল। এসব ফুলের কোনোটা দেশি। আবার কোনোটা বিদেশি।
ফুলের খদ্দের মূলত তরুণরাই। চড়া দাম দিয়ে কিনছেন। হাতে নিয়ে বয়ে বেড়াচ্ছেন। প্রিয়জনদের হাতেও তুলে দিচ্ছেন। রমনীরা ফুলের মালা মাথায় দিয়ে রঙিন উৎসবে মেতেছেন।
উৎসবের নগর
শাহবাগের চারুকলা ও ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর বসন্ত ও ভালোবাসা উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু উৎসব গণ্ডি ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে শহরের আনাচে-কানাচে। দিনের উষ্ণতা যত বাড়ছে মানুষের মনের হৃদ্যতাও বাড়ছে।
মোবাইল ফোনে, ক্ষুদে বার্তায় কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন ও বসন্ত ও ভালোবাসার বার্তা।
এমআই