জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ অর্থ বছরের সদ্য ঘোষিত মোট বাজেটের ৬০ শতাংশ প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও গবেষণাকে উপেক্ষা করে প্রশাসনিক কাঠামোর পেট ভরানোর জন্য এ বাজেট করা হয়েছে মন্তব্য করেছে ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ।
বৃহস্পতিবার সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।
গত ২৭ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়ালি এক সিন্ডিকেটের বিশেষ সভায় ২০২১-২২ অর্থ বছরের জন্য ২৬৬ কোটি ২৪ লাখ টাকার বাজেট পাস করা হয়। যা গত বছরের তুলনায় ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা কম। এ বাজেটে ঘাটতি রয়েছে ৪০ কোটি ৯২ লাখ ৩ হাজার টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭৩’র অধ্যাদেশের ২১(খ) ধারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট সিনেট কর্তৃক পাশের বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও সিনেট সভা আহ্বান না করে অনলাইনে সিন্ডিকেট ডেকে বাজেট পাশ করা হয়েছে। এতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গবেষণাকে উপেক্ষা করে ২৬৬ কোটি টাকার মোট বাজেটের মধ্যে প্রায় ১৫৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনিক ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা খাতে। যা মোট বাজেটের ৬০ শতাংশ।
“জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি করোনা অতিমারীর সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটানোর আয়োজন নিশ্চিত করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের বরাদ্দ ১ কোটি ৮ লাখ ৭২ হাজার টাকা কমানো হয়েছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়বে প্যাথলজি সেবা ও ঔষধ সরবরাহের উপর।”
এছাড়া বাজেটে গবেষণা খাতে মাত্র ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রমাণ করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি তার প্রধান কাজ থেকে যোজন যোজন দূরে সরে গেছে। আর অতীত অভিজ্ঞতা থেকে গবেষণা খাতে বরাদ্দকৃত বাজেটের যথাযথ বণ্টন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিয়ে সংশয় তো থাকছেই। ফলে বাজেটে স্বাস্থ্য খাত ও অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতির মানোন্নয়নের মনোভাব ও গবেষণা খাতকে উপাক্ষা করা হয়েছে বলে মনে করছে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বাজেট প্রসঙ্গে বলেন, “দলীয় লোক, সন্তান-সন্ততি, আত্মীয়-স্বজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি দেওয়ার প্রবণতা আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের একটি বহুল চর্চিত প্রবণতা। হরহামেশাই এসব নিয়োগ নিয়ে রমরমা বাণিজ্যের খবরও সামনে আসে। ব্যক্তিক অথবা দলীয় স্বার্থে ক্রমেই ফুলে-ফেঁপে ওঠা প্রশাসনিক কাঠামোর বেতন-ভাতাদি ও অন্যান্য প্রশাসনিক খরচ বাবদ মোট বাজেটের একটি বড় অংশ বরাদ্দ দিতে হয়। নামমাত্র বরাদ্দ জুটে গবেষণায়, স্বাস্থ্যে ও অন্যান্য শিক্ষা সংশ্লিষ্ট খাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের বাজেট এই পুরো চিত্রটিকেই প্রতিফলিত করে।”
সময় জার্নাল/এসএ