নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর উত্তরায় নিজের বাসায় খুন হয়েছেন হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া। তাকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে বাথরুমে আটকে রেখে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে বাথরুমের দরজা ভেঙে বের হলে প্রতিবেশীরা তাকে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সোমবার (১০ মার্চ) ভোরে উত্তরার উত্তরখান পুরান পাড়ার একটি বাসার চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে হামলার ঘটনাটি ঘটে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির উত্তরা বিভাগের দক্ষিণখান অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. নাসিম। তিনি বলেন, প্রতিবেশী ও বাড়ির মালিকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, যে বাসায় সাইফুর রহমান ভূঁইয়া খুন হয়েছেন সেখানে তিনি নিয়মিত থাকতেন না। মাঝে মধ্যে আসতেন। তিনদিন আগে বাসাটিতে আসেন ওই শিক্ষক। এদিন এক নারী ও যুবক আসেন বাসায়। তাদেরকে ভাবি ও ভাতিজা পরিচয় দেন সাইফুর রহমান। ধারণা করা হচ্ছে সোমবার ভোরে ওই দু’জন তাকে কুপিয়ে জখম করে বাথরুমে আটকে রেখে ফ্ল্যাটের মূল দরজা বন্ধ করে চলে যায়। সাইফুর রহমান ভূঁইয়া বাথরুমের দরজা ভেঙে বের হন। এরপর প্রতিবেশীদের সহায়তায় উত্তরার একটি হাসপাতালে যান। সেখানেই তার মুত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী এটা স্পষ্ট মার্ডার। কে বা কারা কেনো এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উত্তরখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল হাসান বলেন, স্থানীয় সংবাদের ভিত্তিতে আজ (সোমবার) বিকেলের দিকে উত্তরখান এলাকার লেক ভিউ হাসপাতাল থেকে শান্তিনগর এলাকায় অবস্থিত হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের উপাধ্যক্ষের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার মুখমণ্ডলসহ সারা শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, গত ছয় মাস যাবত তিনি উত্তরখান মাজার রোড পুরান পাড়া এলাকার একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই-একদিন আগে তার বাসায় মেহমান আসে। এদের মধ্যে একজন ছেলে ও একজন মেয়ে। ঘটনার পর থেকে তাদের আর পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয় লোকজন ভাইস প্রিন্সিপালকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে লেকভিউ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতের পরিবারের লোকজন ও স্ত্রী শান্তিনিকেতন এলাকায় থাকেন। বিস্তারিত পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খোঁজখবর নিচ্ছেন।
উত্তরখান থানার ওসি মো. জিয়াউর রহমান বলেন, তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে দেশীয় অস্ত্রের দাগ রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।