রাফি উজ্জামান, রাবি প্রতিনিধি :
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রকাশসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৫মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এসব দাবি জানিয়েছেন তারা।
তাদের বাকি তিনটি দাবি হলো— রাকসু নির্বাচনের নির্ধারিত সময়সূচি মেনে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা ও রাকসুর নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে, ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত যাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব ছিল শুধু তারাই এই রাকসু নির্বাচনের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন; রাকসু নির্বাচন কমিশনকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে সকল স্টেইকহোল্ডারের সাথে আলোচনা করে রাকসুর তফসিল ঘোষণা করতে হবে এবং ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহিরাগত বাইক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও বহিরাগত প্রবেশ সীমিত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাবি শাখা সোচ্চার স্টুডেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি এস এম সালমান সাব্বির। তিনি বলেন, রাকসু কেবল একটি সাধারণ প্লাটফর্ম নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্র চর্চার ও দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরীর সূতিকাগার। বিগত ৩৬ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আন্দোলন ও সংগ্রাম করে আসছে। জুলাই অভ্যুত্থানের ৯ দফা দাবির অন্যতম প্রধান দাবি ছিল দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দ্রুত আয়োজন ও লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির অবসান ঘটানো।
খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তা আটকানো হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষিত হলেও বারবার তা উপেক্ষিত হয়েছে। গত ১৩ এপ্রিল নির্বাচনী আচরণবিধি প্রকাশের কথা থাকলেও তা আজ অবধি প্রকাশ করা হয়নি। সর্বশেষ গত ২৮ এপ্রিল খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তা আটকানো হয়েছে বলেই আমরা মনে করছি। আজ ৫ মে, এখনো পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। যথাসময়ে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে না পারায় রাকসু নিয়ে বিভিন্ন মহলের অপকৌশলের সন্দেহ তৈরি করে।
রাকসুর দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ যেকোনো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি গ্রহণে প্রস্তুত বলে জানান এস এম সালমান সাব্বির। তিনি বলেন, কিছুদিন পূর্বে রাকসু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হলেও আজ পর্যন্ত সেই কমিটি কোনো মিটিংয়ে বসতে পারেনি। এছাড়াও গত কয়েকদিনে রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মুখোমুখি অবস্থান ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করছে এবং নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি করছে। রাকসু কোনো করুণা নয়। এটি আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। এই অধিকারের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসমাজ যেকোনো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব, সালাহউদ্দিন আম্মার, ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা, আকিল বিন তালেব, তাসীন খান, মাহায়ের ইসলাম, ফৌজিয়া নওরীন, আতাউল্লাহসহ বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এমআই