খালেদ হোসেন টাপু, রামুঃ
কক্সবাজারের রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নে পাহাড়চূড়ায় ঐতিহাসিক ‘রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধবিহারে বুদ্ধবর্ষ ২৫৬৯ বুদ্ধাব্দ বরণ উপলক্ষে বিহারে দুই দিনব্যাপী ধর্মীয় উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর অন্যতম ৮৪ হাজার ধর্মস্কন্ধ (বুদ্ধ) পূজা, ১০১ জন কুলপুত্রকে গণপ্রব্রজ্যা প্রদান ও ধর্মীয় কীর্তন। এখানে রামু উপজেলা ছাড়াও কক্সবাজার জেলা, পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবানসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন হাজার হাজার পূর্ণার্থীরা।
২৫৬৯ বুদ্ধবর্ষবরণ উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবের প্রথম দিন শনিবার বেলা দুইটায় শুরু হয় ভিক্ষু শ্রামণের মাধ্যমে ১০১ জনের চুল ছেদন, সাদা বস্ত্র গ্রহণ ও পরিধান। বেলা ৩টায় ১০১ জন কুলপুত্রকে গণপ্রব্রজ্যা দেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে হাজারো পুণ্যার্থীর উপস্থিতিতে হাজার প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়। রাতের ভোজন শেষে ১০টায় ধর্মীয় কীর্তন করা হয়। রাত ১২টার দিকে শুরু হয় পূজা।
রবিবার ভোররাত থেকে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা। ভোর চারটায় বুদ্ধপূজা উত্তোলন, সাড়ে পাঁচটায় বুদ্ধপূজা উৎসর্গ ও পুণ্যানুমোদন, সকাল সাতটায় ভিক্ষু-শ্রমণের প্রাতরাশ গ্রহণ, সকাল ১০টায় সারমেধ, প্রজ্ঞালোক, জগৎচন্দ্র, প্রজ্ঞাজ্যোতি ও চন্দ্রজ্যোতি মহাথেরদের স্মরণে মহাসংঘদান, বেলা সাড়ে ১১টায় ভিক্ষু-শ্রমণের মধ্যাহ্ন গ্রহণ এবং দুপুর ১২টা থেকে পুণ্যার্থীদের ভোজন। এরপর সমবেত প্রার্থনা।
বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনেই বুদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক মহামতি গৌতম বুদ্ধ জন্ম, বুদ্ধত্বলাভ ও মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। ত্রিস্মৃতি বিজড়িত এই দিনটি বৌদ্ধ ধর্মের মানুষের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের পরিচালক জ্যোতিসেন থের বলেন, ‘সমবেত প্রার্থনায় আমরা পৃথিবীর সব সম্প্রদায়ের মানুষের শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করেছি এবং যুদ্ধবিগ্রহ, হানাহানিমুক্ত শান্তিময় পৃথিবী প্রত্যাশা করেছি।
এদিকে আড়াই হাজার বছরের পুরোনো দেশের ঐতিহাসিক এই বৌদ্ধবিহারের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট অশোক। আধুনিক নকশা ও শৈলীতে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এই বিহার দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ছুটে আসেন।