বেরোবি প্রতিনিধি :
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্যবিরোধী প্রতীক শহীদ আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার দ্বিতীয় তলায় নিপীড়নবিরোধী ছাত্রজোটের ব্যানারে ‘আবরার থেকে আবু সাঈদ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেরোবি উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর-রশিদ এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ইলিয়াস প্রামাণিক।
সভায় সভাপতিত্ব করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ এবং সঞ্চালনা করেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিমুল সরদার।
আলোচনা পর্বে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, “আবরারের অপরাধ ছিল ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কণ্ঠ তোলা। তিনি জাতিকে জাগ্রত করে গেছেন। তাঁর শাহাদতের পর থেকেই তরুণ সমাজ জেগে উঠেছিল, জুলাই বিপ্লবের বীজ তখনই বপন হয়। শহীদ আবরার ফাহাদ আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক।”
ছাত্র উপদেষ্টা ইলিয়াস প্রামাণিক বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিবাদের কালো থাবায় ছিল বাংলাদেশ। আবরার ফাহাদ সেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শিখিয়ে গেছেন। তাঁর এবং শহীদ আবু সাঈদের চেতনা প্রতিটি শিক্ষার্থীর মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।”
রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, “আবরার ফাহাদ কিংবা শহীদ আবু সাঈদের কোনো মৃত্যু নেই। ভারত আমাদের ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছে— সেই সত্য উচ্চারণের কারণেই আবরারকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আজকের প্রজন্ম ফাহাদের চেতনাকে ধারণ করেছে, যার প্রতিফলন দেখা গেছে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে।”
উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, “শহীদ আবরার ফাহাদ ও শহীদ আবু সাঈদ একই চেতনার মানুষ ছিলেন। তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে জীবন দিয়েছেন। ভবিষ্যতে যেন আর কাউকে এমন পরিণতি বরণ করতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন আমরা দেখেছি, তা বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে ঘটে মর্মান্তিক এক ঘটনা। ফেসবুকে ভারতবিরোধী একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে তৎকালীন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। দেশব্যাপী আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর বুয়েটে নিষিদ্ধ করা হয় ছাত্ররাজনীতি।
ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও আবরার ফাহাদের সাহস, দেশপ্রেম ও সংগ্রামী চেতনা আজও তরুণ সমাজকে অনুপ্রাণিত করছে।
এমআই