রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

চোখের সামনে বাড়ি ভেঙ্গে তিস্তায় বিলীন হয়ে গেছে

বুধবার, জুলাই ২৮, ২০২১
চোখের সামনে বাড়ি ভেঙ্গে তিস্তায় বিলীন হয়ে গেছে

শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত, লালমনিরহাট প্রতিনিধি : প্রতিবছর বন্যার পর শুরু হয় তিস্ত নদীর ভাঙ্গন। তীব্র ভাঙ্গনে দিশেহারা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ৩ ইউনিয়নের ১০ গ্রামের মানুষজন। গত কয়েকদিনের বন্যায় সিন্দুর্না ইউনিয়নের চর সিন্দুর্না গ্রামের ৭টি বাড়ি ও কয়েকশ একর জমি ও ভিটেমাটি,  পাটিকাপাড়া ইউনিয়নে ৪টি বাড়ি ও ডাউয়াবাড়ীতে ৮টি বাড়ি ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আরো শতাধিক ঘরবাড়ি, স্কুল, ক্লিনিকসহ নানা স্থাপনা হুমকিতে রয়েছে। 

সিন্দুর্না ইউনিয়নের চর সিন্দুর্না গ্রামের ১, ২ও ৩ নং ওয়ার্ডের তিস্তা নদীর ভাঙ্গন মারাত্বক আকার ধারণ করার বাস্তব দৃশ্য চোখে পড়ে। ওই সব এলাকার মানুষজনের দুঃখ-দুর্দশা বাস্তবে না গেলে জানা যাবেনা। দুঃখ, কষ্ট ও উৎকণ্ঠায় কাটছে তাদের জীবন। অনেকে তাদের পালিত গরু, ছাগল, ঘরের আসবাবপত্র নিয়ে যাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়ে। দেখতে দেখতে জমিজমা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।  অনেকে তাদের আবাদী আমন ধানের চারা গো খাদ্যের জন্য কেটে কেটে নিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে তিস্তার ভাঙ্গনে বসতভিটে হারিয়ে শত শত পরিবার রাস্তার ধারে, খোলা আকাশে মানববেতর জীবন যাপন করছে। সরকারিভাবে তাদের পূর্নবাসনের আশ্বাস দিলেও তা করা হয়নি।

আলিমুদ্দিন সরকারি কলেজের অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, লেখাপড়া শেষে চাকুরী চাইনা, তিস্তা নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী সমাধান চাই। আমি শুনেছি তিস্তা নদীকে কেন্দ্র করে সরকারের মহা পরিকল্পনা রয়েছে। যে পরিকল্পনার মাধ্যমে তিস্তার দু’ধারে বাধ দিয়ে নদীর ভাঙ্গনরোধ, তিস্তার পাশ্ববর্তী এলাকা সৌন্দর্যময় করে স্থানীয় জনগনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। এটা স্বপ্ন নয়, জীবদ্দশায় বাস্তবে দেখতে চাই। এ পরিকল্পনা বাস্তবে রুপ নিলে চাকুরী ছাড়া পৈত্তিক সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি দিয়ে  নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই সৃষ্টি করতে পারবো।

ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত চর সিন্দুর্না গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, চোখের সামনেই বাপ দাদার ভিটে বাড়ি ভেঙ্গে তিস্তা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যে কিনারায় বসতবাড়ি করি সেখানেই আবার নতুন করে ভাঙ্ন দেখা দেয়। এভাবে ভাঙ্গনে সর্বশান্ত হয়ে গেছি। তিস্তার ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহবানও ওই ব্যক্তির।

সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরল আমিন বলেন, এবারের বন্যায় পানি বৃদ্ধি পায়নি, কিন্তু নতুন নতুন এলাকায় ভাঙ্গন মারাত্বক আকার ধারণ করেছে। এবারের ভাঙ্গনে সিন্দুর্না ইউনিয়নে ইতোমধ্যে ৭টি বসতবাড়ি ও কয়েকশো একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, আরো নতুন নতুন এলাকা ভাঙ্গছে। থামছেনা তিস্তার ভাঙ্গন।

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হয়েছে। এবারে বন্যায় তিন ইউনিয়নে এ পর্যন্ত ১৯টি বাড়ী ভাঙ্গনের তালিকা পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে  পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের ৪টি পরিবারের জন্য এক বান্ডিল ঢেউটিন ও তিন হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।  অন্যান্যদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে।
 
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, সোমবার সারাদিন ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তাদের জন্য করণীয় সবকিছু করা হবে।

সময় জার্নাল/এমআই


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল