শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত: স্বদেশে ফিরতে পূর্ণ নাগরিক অধিকার চায় রোহিঙ্গারা

বুধবার, আগস্ট ২৫, ২০২১
প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত: স্বদেশে ফিরতে পূর্ণ নাগরিক অধিকার চায় রোহিঙ্গারা

গোলাম আজম খান, কক্সবাজার: রোহিঙ্গা সংকটের চার বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের যে কোন তৎপরতা বন্ধে কঠোর অবস্থানে নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ বুধবার সকাল থেকেই কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় ৩৪ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এপিবিএন এর সদস্য ছাড়াও জেলা পুলিশের সদস্য র্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তৎপর রয়েছে। আজ ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা সংকটের চার বছর পুর্তি। ২০১৭ সালের এই দিনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গনহত্যার মুখে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কক্সবাজারে সাড়ে সাত লাখের অধিক রোহিঙ্গা কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছিল। এর ঠিক দুই বছরের মাথায় ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার সমাবেশের ঘটনায় দেশ বিদেশে ব্যপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। এর পর সরকার ক্যাম্পে যে কোন ধরনের সভা সমাবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। 

কক্সবাজারে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত জানিয়েছেন কোভিড ১৯ পরিস্থিতি সহ নিরাপত্তা জনিত কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সভা সমাবেশের কোন সুযোগ নেই। বর্তমানে ৩৪ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্ত রয়েছে। 

তবে ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে রোহিঙ্গা সংকটের চার বছর পূর্তির দিন ফজরের নামাজের পর মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্লে কার্ড নিয়ে রোহিঙ্গা শিশুরা বিচ্ছিন্ন ভাবে ছোট ছোট সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন করেছে। তবে পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পেই এপিবিএন সদস্য পুলিশের টহল জোরদার করে। 

এদিকে জাতিগত সহিংসতার কারণে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের ৪ বছর পূর্ণ হলেও মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় নেই কোনো অগ্রগতি। রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরতে পূর্ণ নাগরিক অধিকার, নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তাসহ রোহিঙ্গারা দিচ্ছে নানা দাবি-দাওয়া।

বুধবার (২৫ আগস্ট) সকালে কুতুপালং ক্যাম্প ১৭ তে সরেজমিনে দেখা যায়, দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছেন মিয়ানমারের ঢেকুবনিয়ার কয়েক বাসিন্দা। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনে প্রাণভয়ে পালিয়ে আশ্রয় নেয় উখিয়ার এই ক্যাম্পে। এখন তাদের চোখে মুখে আর নেই, সেই আতঙ্ক, মুখে ফিরেছে হাসি। 

রোহিঙ্গাদের দাবি, দেশে ফিরতে মিয়ানমারকে পূর্ণ নাগরিক অধিকার ও নিরাপদ পরিবেশের নিশ্চয়তা দিতে হবে। 

অপরদিকে স্থানীয়দের মতে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে ধ্বংস হয়েছে হাজার হাজার একর পাহাড় ও বনভূমি। বিনষ্ট হয়েছে পরিবেশ ও বন্যপ্রাণীসহ জীববৈচিত্র্যের। যতই দিন যাচ্ছে মাদকপাচার, মানবপাচার, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, খুন ও অপহরণসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। ছড়িয়ে পড়ছে দেশের নানাপ্রান্তে, চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশে স্থায়ী হওয়ার। এতে স্থানীয়রা নানা বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে বলে দাবি জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহলের। 

কক্সবাজারের উখিয়া রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, বিভিন্ন জায়গায় তারা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসা, বাণিজ্য, গাড়ি পরিচালনাসহ নানা কাজে তারা জড়িয়ে পড়ছে। 

কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, এরা টাকার বিনিময়ে খুন করছে, মাদক পাচার করছে। 

এদিকে রোহিঙ্গা সংকটের চার বছর পুর্তির দিন ২৫ আগষ্ট সকালে কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের দাবীতে মানববন্ধন করেছে।  

মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তারা জানান কক্সবাজারে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাসের কারণে কক্সবাজারে স্হানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে নানা সংঘাত দেখা দিয়েছে। মাদক কারবার হত্যা অপহরণ সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। কক্সবাজারে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করে তাদেরকে এক জায়গায় নিয়ে আসা দরকার। যারা অবৈধভাবে পাসপোর্ট ও এনআইডি করেছে সবগুলো বাতিল করতে হবে। 

রোহিঙ্গাদের মদতদাতা চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সমাবেশে দাবি জানান বক্তারা।

সময় জার্নাল/এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল