জুনাইদ আল হাবিব' এর একগুচ্ছ কবিতা
১. অভিযোগ
ছেলেটার ভীষণ অভিযোগ, রাত হলেই নেমে আসে না তার প্রিয়জন। কেনই নেমে আসে ভীষণ একার দেয়াল, শূন্যের মরুভূমি।
ছেলেটার বড় অভিযোগ, প্রেয়সি বেলা গড়ালেই তার খোঁজ নেয় না। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে তাকে মনে করে না। জুড়িয়ে দেয় না গল্পের আসর।
ছেলেটার বড্ড অভিযোগ, হৃদয়ে লালন করা মানুষটি কেন আজও ভীষণ ছন্নছাড়া। কেন একটু হাসিতে তার মনটা ভালো করে দেয় না।
ছেলেটার আরো অভিযোগ, কেন এত পরেও মনের চার দেয়ালে বসবাস করা মানুষটি তার জীবনে আজও অধরা। ছেলেটির শত অভিযোগ, শেষ নয় কোন রাত, নিশিরাত, সকাল গড়িয়ে বেলা, নয়তো বিকেল।
তোমাদের দিবস, রজনী এলেই চেতনা নামে,
অথচ, এপার-ওপারে দ্যাখেছো কত তফাৎ!
২. বৈষম্য
তোমাদের রাত্রি শেষ হয় এসির বাতাসে,
আর, তাদের ঘুম ভাঙে ধোঁয়ার দুর্গন্ধে,
আগুন জ্বালিয়ে তোমরা তৈরি করো কতো উঁচু প্রাসাদ।
তোমরা চোখের তলে দ্যাখো, তারা মাছি,
তোমাদের কাছে তারা লবণ মরিচের ফাঁসি!
তোমরাই শোষক, তোমরাই শাসক,
তোমরাই অপরাধী জঘন্য,
তোমাদের মানসিকতা আজ নিঁচু,
জানো কী আলালের ঘরে দুলাল,
তোমার বাবার আয়-রোজগারে,
কামিয়েছে কী হালাল!
৩. লোকশূন্য প্রান্তর
মেঘের খামে তোমার নামে
লিখেছিলাম চিঠি,
ভর দুপুরে মনে পড়ে,
কথার হয়নি ইতি।
রোদ্র দুপুর, মুগ্ধ বেলা,
তোমার কথার মনে মেলা,
দিন গেলে শূন্য তুমি,
এই মনেই মরুভূমি।
তোমায় আর দেখা মিলবে কী? বলো।
তোমাতেই মেঘের উপত্যকা,
বৃষ্টি নামবে বলে
শহরে লোকশূন্য প্রান্তর!
তোমাকে দেখি না বলে,
রাতের আকাশে চাঁদ খুঁজি!
আর কবেই বা দেখিব তোমায়,
নয়নজুড়ে তোমার সেই হাসি
কবেই বা আর দেখিব!
মেঘের মাঝেই কাটাই রাত-দিন,
চাঁদমুখখানি অবধি স্পর্শহীন,
তুমিহীন বেলায় গড়ায় মলিন!
তোমার বাঁধনহারা জীবনজলে
শূন্যে ভাসাই ভেলা,
তোমার নামেই নীলাকাশে
চাঁদনি রাতের মেলা!
৪. তোমার প্রতিক্ষা
তুমি ভালোবাসো
ভরা নদী, নয়তো ভাটায়
পাহাড় মিল খোঁজে নদীতে
সাগরও মিল চায়, প্রত্যাশায়
মাঝির ট্রলারও জানে,
ভীষন্ন ঢেউ পাড়ি দেবার উপায়
আমি জানিব না ক্যামনে
তোমার মন দরিয়ায় কীভাবে
সাঁতার কাটার যত ধারা, উপ-ধারা।
একটি নরম সকাল হবে
তোমার নামে,
একটি নরম বেলা হবে
তোমারই মুগ্ধ মায়ায়,
চারদিকে শোরহীন একটা সময় হবে,
শুধু তোমার নামে,
বেলা গড়ালেও ক্ষণ রবে
তোমার নামে,
তবে, তুমি কবে আমার হবে?