বিনোদন ডেস্ক। শহর থেকে উপকূলের গ্রামে গিয়েছিলেন ভাস্কর রুদ্র। ভাস্কর্য নির্মাণ করতে গিয়ে তিনি বাধার মুখোমুখি হন স্থানীয় চেয়ারম্যানের। সারা গ্রামে রটে যায়- সাগরে জেলেদের মাছ না পাওয়ার কারণ ওই ভাস্করের ভাস্কর্য। এইভাবে দাদন ব্যবসায়ী চেয়ারম্যান ধর্মকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ঝড়ের মারাত্মক বিপদ সংকেত থাকার পরও চান জেলেদের মাছ ধরার জন্য সাগরে পাঠাতে। কিন্তু ভাস্কর তাদের নিরুৎসাহিত করেন। চেয়ারম্যানের সঙ্গে নানা টানাপোড়েন, গ্রামেরই মেয়ে টুনির সঙ্গে নিবিড় সখ্য, জেলেদের প্রতিদিনের জীবন সংগ্রাম- এসবের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে 'নোনা জলের কাব্য' চলচ্চিত্রের গল্প।
আজ (শুক্রবার) থেকে প্রেক্ষাগৃহে দেখা যাবে বাংলাদেশ ও ফরাসি সরকারের প্রাথমিক অর্থায়নে নির্মিত এ চলচ্চিত্র। এটি প্রদর্শিত হবে ঢাকায় স্টার সিনেপ্লেক্সের সব শাখায়, শ্যামলী সিনেমা ও ব্লকবাস্টার মুভিজে। এ ছাড়াও এটি চলবে নারায়ণগঞ্জের সিনেমাস্কোপ, চট্টগ্রামের সিলভারস্ট্ক্রিন ও সুগন্ধা সিনেমা এবং বগুড়ার মধুবন প্রেক্ষাগৃহে।
বৃহস্পতিবার রাতে স্টার সিনেপ্লেক্সের এসকেএস টাওয়ার শাখায় ছবিটির গালা প্রিমিয়ার আয়োজিত হয়। এতে অংশ নেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ছবির কলাকুশলীসহ বিশিষ্টজন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবনের মিলনায়তনে সংবাদকর্মীদের জন্য ছবিটির বিশেষ প্রদর্শনী হয়। প্রদর্শনীর পর সংবাদকর্মীদের সঙ্গে চলচ্চিত্রটি নিয়ে কথা বলেন পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত, অভিনেত্রী তাসনোভা তামান্নাসহ এর অন্য কলাকুশলী।
দীর্ঘ সাত বছরের যাত্রা শেষে মুক্তি পেল পরিচালক রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য এ চলচ্চিত্র। তিনি বলেন, 'নোনা জলের কাব্য' আমার সত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এ ছবি নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে আমি নিজে আরও পরিণত হয়ে উঠেছি। বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রটি যথেষ্ট খ্যাতি অর্জন করেছে। বিশেষ করে কপ২৬ সম্মেলনেও প্রশংসা কুড়িয়েছে। বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্য ও প্রকৃতির ভয়াল রূপ একই সঙ্গে এ চলচ্চিত্রে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
সম্প্রতি পটুয়াখালী জেলার প্রত্যন্ত উপকূলীয় অঞ্চলে চলচ্চিত্রটির তিনটি প্রদর্শনী হয়েছে জানিয়ে শাহরিয়ার সুমিত বলেন, 'আমাদের কমিটমেন্ট ছিল, যেহেতু ছবিটি জেলেদের জীবনকে কেন্দ্র করে নির্মিত; তাই দেশে তারাই এটি প্রথম দেখবে। নিজেদের জীবনের গল্প পর্দায় দেখে তারা আমারই মতো আবেগাপ্লুত। প্রায় এক হাজার জেলে ও তাদের পরিবার এ প্রদর্শনী দেখেছেন। আশা করব, দেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীরা আমার ছবিটি পছন্দ করবেন। তারা হলে গিয়ে ছবিটি দেখবেন। এ ছবির মাধ্যমে আমি শুধু জলবায়ু-যোদ্ধাদের জীবনেই পরিবর্তন আনতে চাই না, বরং ধর্মীয় সহিংসতা বন্ধেও ভূমিকা রাখতে চাই।'
তাসনোভা তামান্না সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, উপকূলে গিয়ে অভিনয় করা খুব সহজ ছিল না। সেখানকার জীবনযাত্রা বোঝার জন্য আমি বেশ কয়েক দিন আগে গিয়ে সেখানে থাকতে শুরু করি। দর্শকরা হলে গিয়ে এ ছবি দেখলেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।
'নোনা জলের কাব্য' ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শতাব্দী ওয়াদুদ এবং তিতাস জিয়া। আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন অর্ণব। এ ছবির টাইটেল স্পন্সর ফ্রেশ এবং পরিবেশক স্টার সিনেপ্লেক্স।
সময় জার্নাল/আরইউ