নিজস্ব প্রতিনিধি: সিলেটের জকিগঞ্জের অমলশিদ এলাকায় বরাক মোহনায় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর উৎসস্থলের একটি ডাইক (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) ভেঙ্গে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। প্লাবিত হচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
শুক্রবার (২০ মে) সকাল পৌনে ৯টার দিকে তীব্র পাহাড়ি ঢলের ধাক্কায় ডাইকটি ভাঙতে ভাঙতে ডাইকের কমপক্ষে ৬০ ফুট অংশ ভেঙ্গে গেছে। এ ভাঙনের ঘটনায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের তীব্র স্রোতে ভারতের সীমান্তবর্তী বরাক নদের মোহনায় ডাইকটি ভেঙ্গে গেছে। এরপর মুহূর্তেই জকিগঞ্জ উপজেলার ফিল্লাকান্দি, অমলশিদ, বারঠাকুরী, খাসিরচক, খাইরচক, বারোঘাট্টা, সোনাসারসহ বেশ কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। একইসাথে উপজেলা সদরের সাথে অমলশিদ যাতায়াতের রাস্তাটিও পানিতে ডুবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে এই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ আছে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সিলেট থেকে প্রায় ৯২ কিলোমিটার দূরে জকিগঞ্জের অবস্থান। এটি জেলার সবচেয়ে দূরবর্তী উপজেলা। ভারতের করিমগঞ্জ জেলার বরাক নদের দুটি শাখা হচ্ছে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদী। এদের মিলনস্থল হচ্ছে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলশিদ এলাকা। এই অমলশিদে একটি ডাইক আছে। বরাক থেকে পানি এসে প্রথমে সরাসরি এ ডাইকে আঘাত করে। এরপর পানি ভাগ হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারায় প্রবাহিত হয়।
সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর মাধ্যমেই মূলত সিলেট বিভাগের প্রায় ১০০টি নদ-নদীতে পানি প্রবাহিত হয়। এখন ডাইক ভেঙ্গে যাওয়ায় পানি কোনো বাধা না পেয়ে তীব্র গতিতে সরাসরি সুরমা ও কুশিয়ারায় গিয়ে ঢুকছে। ফলে পুরো সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
জকিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পল্লব হোম দাস নয়া দিগন্তকে বলেন, ডাইকটি ভেঙ্গে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে প্রবল বেগে পানি ঢুকছে। এতে নতুন করে উপজেলার কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ডাইক ভেঙ্গে যাওয়ায় সিলেটের অন্যান্য উপজেলায়ও পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে।
এদিকে প্রায় ১৫ দিন ধরে টানা বৃদ্ধির পর অবশেষে ভাটার টান পড়েছে সুরমার পানিতে। শুক্রবার থেকে সিলেটের এই প্রধান নদীর পানি কিছুটা কমতে শুরু করে। তবে এখনো প্রতিটি পয়েন্টেই বিপদসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সময় জার্নাল/এলআর