জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশ্য দিবালোকে কীভাবে এ ধরনের (২১ আগস্টের হামলা) গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেদিন নেতাকর্মীরা আমাকে ঘিরে একটা মানবঢাল তৈরি করে। একের পর এক গ্রেনেড হামলা। হানিফ ভাইয়ের গায়ে ও মাথায় যে স্প্লিন্টার লেগেছে, সেটার কারণে তার রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে আমার গায়ে পড়ছিল। এরকম একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি।
রোববার (২১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ঘটনা বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, যখন বক্তৃতা শেষ করে মাইকটা টেবিলে রাখতে যাব, এমন সময় ফটোগ্রাফার গোর্কি এসে আমাকে বলে, ‘আপা আমি ছবি নিতে পারেনি, আপনি একটু দাঁড়ান। ‘ কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। অন্যান্য ফটো সাংবাদিকরাও ট্রাকের ওপর বসে চিৎকার করছে, বলছে আপা একটু দাঁড়ান। ওই একটা সেকেন্ড বা দুইটা সেকেন্ডের বিষয়। এরপর চারদিকে বোমাবাজি, গ্রেনেড হামলা।
তিনি বলেন, প্রথমে আমাদের ঘটনা ধরতেই কষ্ট হয়েছে, এত বোমাবাজি কেন? শুধু একটার পর একটা গ্রেনেড ছোঁড়া হচ্ছে। আমাকে সঙ্গে সঙ্গে… পাশে হানিফ ভাই (প্রয়াত মেয়র) দাঁড়িয়েছিলেন, সেদিন তিনি একটু বেশি… দাঁড়াচ্ছিলেন, তখন আমি বললাম আপনি এইভাবে দাঁড়াচ্ছেন কেন! আমি সবাইকে দেখতে পাই না। উনি বলে আপনি বুঝবেন না, এটা আমাদের নিয়ম, আমরা এইভাবে দাঁড়াবো। চারদিকে আমাদের নেতারা ছিল। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে টান দিয়ে বসিয়ে ফেলে। আমাকে ধরে রাখে, আমার সঙ্গে নজিব ও মামুন (নিরাপত্তা কর্মকর্তা) ওরা আমাকে ঘিরে ধরে। পাশে মায়া ছিল।
সরকারপ্রধান বলেন, আমরা যারা সেইদিন ট্রাকে ছিলাম, একটা গ্রেনেড যদি ট্রাকের ওপর পড়তো তাহলে হয়তো কেউ রেহাই পেতাম না। জানি না ভাগ্যে কি ছিল। ট্রাকের ঢালার সঙ্গে লেগে গ্রেনেড নিচে পড়ে যায়।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এসে পৌঁছান। এসময় তিনি ২১ আগস্টের হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ওই হামলায় আহত ও নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম প্রমুখ। এছাড়াও মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এমআই