অর্থনৈতিক রিপোর্টারঃ:
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, সামনে রাজনৈতিক সংঘাত নয়, অনিশ্চয়তা আছে। রাজনীতির আকাশে কালো মেঘ দেখা যাচ্ছে। তবে আশা করি, ঝড় আসবে না। রাজনীতিবিদদের আলোচনার পথে আসতে হবে, সভ্যতা-ভব্যতার পথে আসতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিয়ে ‘চেঞ্জ অব ফেব্রিক’ প্রতিবেদনটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংক মুখ্য অর্থনীতিবিদ নোরা ডিহেল ও মুখ্য অর্থনীতিবিদের পরামর্শক জাহিদ হোসেন। এ ছাড়া বক্তব্য দেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান, এসবিকে টেক ভেঞ্চারস ও এসবিকে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশীর কবির, বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে মূল ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যান ড্যান চ্যান।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, সংস্কার না হলে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে। প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ব্যবসায় প্রতিযোগিতা সক্ষমতা, আর্থিক ও নগরায়ণ-এই তিন খাতে সংস্কারের পরামর্শ দেয়া হয়।
এই বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক খাতসহ বিভিন্ন খাতে সমস্যা আছে। নানা কারণে এই খাতগুলোয় অনেক ব্যর্থতা আছে। এসব খাতের সংস্কার করতে হবে। অবশ্যই আমরা ভালো সংস্কার করবো-জনগণ সংস্কার চায়-পুরো সংস্কার না পারলেও কিছুটা করতে পারবো। এই বিষয়ে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি।
সংস্কারের সঙ্গে রাজনৈতিক অর্থনীতির সম্পৃক্ততা প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘জোরকদমে হাঁটতে পারবো না। তবে সামনে এগিয়ে যাবো। আপনারা যতটা জোরকদমে চান, ততটা জোরকদমে হয়তো হাঁটতে পারবো না।’
বিশ্বব্যাংক বলেছে, সংস্কার না হলে ২০৩৫ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে নেমে যেতে পারে। আর মোটামুটি ধরনের সংস্কার হলে ৫.৯ শতাংশ এবং ভালো রকম সংস্কার হলে সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। সংস্কার না হলে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির গতিও কমে যাবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ধরে রাখতে বিশ্বব্যাংক কিছু সুপারিশ করেছে। যেমন; রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনা। এ ছাড়া বাংলাদেশের শুল্ক-করহার অন্য দেশের তুলনায় বেশি, যা বাণিজ্যে সক্ষমতা কমাচ্ছে, তাই করহার যৌক্তিক করা। ব্যাংক খাত সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক বলেছে, ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংক খাতের পারফরম্যান্স গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, কিন্তু দেশের আর্থিক খাত অতটা গভীর নয়। গত চার দশকে আর্থিক খাতের উন্নতি হলেও এখনো তা পর্যাপ্ত নয়। অন্যদিকে আধুনিক নগরায়ণ বাংলাদেশের পরবর্তী ধাপের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তাই ভারসাম্যপূর্ণ আধুনিক নগরায়ণের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
এমআই