বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

দক্ষিণ আফ্রিকার বিদায়, এবার পাকিস্তানকে হারালেই সেমিফাইনালে বাংলাদেশ

শনিবার, নভেম্বর ৫, ২০২২
দক্ষিণ আফ্রিকার বিদায়, এবার পাকিস্তানকে হারালেই সেমিফাইনালে বাংলাদেশ


স্পোর্টস ডেস্ক:


‘বোলিং আমাদের মূল শক্তি। শুধু দরকার কিছু রান’ কাল আইসিসি প্রিভিউ’তে কথাটা বেশ আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেছিলেন পল ফন মিকেরেন। নেদারল্যান্ডসের এই পেসারের কথা শুনেই হয়তো আজ ডাচ ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠেছে।


অ্যাডিলেড ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪ উইকেটে ১৫৮ রান করেছে স্কট এডওয়ার্ডসের দল। যা তাড়া করতে নেমে বার বার হোঁচট খেয়েছে প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়া ইনিংস থেমেছে ১৪৫ রানে। ১৩ রানের ঐতিহাসিক জয় নিয়ে অ্যাডিলেডে উল্লাসে মাতে ডাচরা। আর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে পড়ার হতাশায় থমথমে মুখশ্রী দেখা যাচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ডাগ আউটে।


মুহূর্তটি মাঠে বসেই দেখেছে একই গ্রুপের দল বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। একই মাঠে আজ এই দুই দল মুখোমুখি হবে। সে ম্যাচে যে জিতবে তাঁরা গ্রুপ ২ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেবে। দক্ষিণ আফ্রিকার হারে গ্রুপ ২ এর প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিল ভারত।




দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিদায় করে দেওয়ার পর নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়দের উল্লাস

দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিদায় করে দেওয়ার পর নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়দের উল্লাসছবি: শামসুল হক

দক্ষিণ আফ্রিকা রান তাড়ার শুরু থেকেই সেরা ছন্দে ছিল না। পাওয়ার প্লেতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে তাঁরা পিছিয়ে পড়ে, রান এসেছে ৩৯। ভালো শুরুর পরও কুইন্টন ডি ককের ইনিংস দীর্ঘ হতে দেননি ফ্রেড ক্লাসেন। ১৩ বল খেলে ১৩ রানে থামে ডি ককের ইনিংস। পাওয়ার প্লের শেষ বলে এসে ফন মিকেরেনের শিকার প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।


উইকেট পতনের এই ধারা বজায় ছিল ইনিংসজুড়েই। দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো জুটিই ৩০ এর ঘরে যেতে পারেনি। নেদারল্যান্ডস উইকেট নিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। সেটাও বোলারদের চাতুর্যের সৌজন্যে। অ্যাডিলেডের এক পাশের বড় বাউন্ডারিতে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের মারতে বাধ্য করেন তাঁরা। উইকেটও ধরা দেয় তাতে। রাইলি রুশো যেমন ব্রেন্ডন গ্লোভারের বলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ আউট হন।

ডাচদের উল্লাস, বিমর্ষ দক্ষিণ আফ্রিকানরা

ডাচদের উল্লাস, বিমর্ষ দক্ষিণ আফ্রিকানরাছবি: শামসুল হক

তখনো অবশ্য প্রোটিয়াদের বড় ক্ষতি হয়নি। এইডেন মার্করাম ও ডেভিড মিলার তাদের ইনিংসের শুরুটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু ১৩তম ওভারে ফ্রেড ক্লাসেন এসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ১৩ বলে ১৭ রান করা মার্করামকে আউট করে। তিনি ৪ ওভার শেষ করেন ২০ রানে ২ উইকেট নিয়ে। তখনো মনে হয়নি অ্যাডিলেডে আজ অঘটন ঘটতে যাচ্ছে।


কারণ মিলারের সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হাইনরিশ ক্লাসেনের জুটির শুরুটা খারাপ হয়নি। কিন্তু গ্লোভারের করা ১৬তম ওভারে ম্যাচের ছবিটা পাল্টে যায়। একই ওভারে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বশেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটসম্যানকে আউট করলে জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে নেদারল্যান্ডস।


চোট নিয়ে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান মহারাজ একটি ছক্কায় ১২ বলে ১৩ রান করে অবিশ্বাস্য কিছু করে ফেলার আভাস দিলেও শেষ পর্যন্ত স্নায়ুর চাপটা ভালো সামলেছেন নেদারল্যান্ডসের ডেথ বোলিং বিশেষজ্ঞ বাস ডি লিডি। ১৮ ও ২০তম ওভার করে নেদারল্যান্ডসের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করেছেন তিনি। গ্লোভার ২ ওভারে ৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেছেন। ডি লিডির শিকার ৩ ওভারে ২৫ রানে ২ উইকেট।


ম্যাচসেরা কলিন অ্যাকারম্যান

ম্যাচসেরা কলিন অ্যাকারম্যানছবি: এএফপি

পুরো বিশ্বকাপে ডাচদের প্রধান দুশ্চিন্তা ছিল তাদের ব্যাটিং। প্রথম রাউন্ড থেকেই তাদের রান ১৫০ পার হচ্ছিল না। অ্যাডিলেড ওভালে এসে অবশেষে নেদারল্যান্ডস পেল বড় রানের দেখা। আর প্রত্যাশিতভাবে সে ভিতটা গড়ে দিয়েছেন দুই ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড ও স্টিভেন মাইবুর্গ। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৮ রান যোগ করেন দুজন। মাইবুর্গের দুর্ভাগ্য, ৩০ বলে ৩৭ রান করে অনিয়মিত বোলার এইডেন মার্করামকে ছক্কা মারতে গিয়ে মিড উইকেট বাউন্ডারিতে তিনি ক্যাচ দেন।


ও’ডাউড অবশ্য টিকে ছিলেন ইনিংসের ১৩তম ওভার পর্যন্ত। তিনে নামা টম কুপারের সঙ্গে আরও একটি জুটি (৩৯ রান) গড়ে নেদারল্যান্ডসকে আরও অনেকটা পথ এগিয়ে নিয়ে যান। আরেক প্রোটিয়া স্পিনার কেশব মহারাজের প্রথম শিকার হয়ে মাঠ ছাড়ার সময় মনে হবে না যে ও’ডাউড বিশেষ কিছু করেছেন।

কিন্তু তাঁর ৩১ বলে ২৯ রানের ইনিংসটি ডাচ ইনিংসের ভিত গড়েছে। যেখানে দাঁড়িয়ে কুপার খেলছেন ১৯ বলে ৩৫ রানের ঝোড়ো ইনিংস। মহারাজের ফ্লাইট মেশানো বলে ছক্কা মারতে গিয়ে কুইন্টন ডি কককে ম্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ২টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছিলেন এই অভিজ্ঞ ডাচ ক্রিকেটার।

আউট হয়ে হতাশ ডেভিড মিলার

আউট হয়ে হতাশ ডেভিড মিলারছবি: এএফপি

তাতে অবশ্য ডাচদের দ্রুত রান তোলা থেমে থাকেনি। কলিন অ্যাকারমান এসে কুপারের দায়িত্বটা সামলে নেন দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে। উইকেট হাতে থাকার সুবিধা কাজে লাগিয়ে ২৬ বল খেলে তিনি ৪১ রান যোগ করেন। অ্যাকারমানের অপরাজিত ইনিংস সেজেছে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায়। তাতেই ডাচরা লড়াই করার মতো পুঁজি পেয়ে যায়।


ওদিকে যে পেস বোলিং নিয়ে প্রোটিয়াদের গর্ব, আজ তাদেরই চার-ছক্কায় ভাসিয়েছে ডাচরা। কাগিসো রাবাদা (১২.৩৩), লুঙ্গি এনগিডি (১১.৬৬) দুজনই রান দেওয়ায় ৩ ওভারের বেশি বল করেননি। ব্যতিক্রম ছিলেন আনরিখ নর্কিয়া। ৪ ওভারে মাত্র ১০ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তবে ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেওয়া মহারাজ ছিলেন প্রোটিয়াদের সেরা বোলার।





এসএম



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল